Top 5 This Week

আজান দিয়ে প্রাণ ভিক্ষা ছোট্ট ইয়াফির

Spread the love

বিডিটাইম ডেস্ক

ছোট্ট ছয় বছরের ইয়াফি—যার বয়সে স্কুলে যাওয়া, মাঠে দৌড়ানো আর হাসিতে মেতে থাকার কথা, সে এখন প্রতিদিন আল্লাহর কাছে জীবন ভিক্ষা চায়। আজান দেয় বারবার, হাত তুলে ফরিয়াদ জানায়—“আল্লাহ, আমাকে বাঁচাও।” ব্রেন ক্যান্সারে আক্রান্ত এই শিশুটির আর্তি শুনে স্তব্ধ হয়ে যায় চারপাশ।

পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের বালুদিয়ার গ্রামের দরিদ্র দিনমজুর ময়ান আলী ও গৃহিণী শিফা খাতুন দম্পতির একমাত্র সন্তান ইয়াফি। স্বপ্ন ছিল স্কুলে যাবার, বন্ধুদের সঙ্গে খেলার, মায়ের হাত ধরে রাস্তা পার হওয়ার। সেই স্বপ্নগুলো এখন থমকে গেছে এক নির্মম বাস্তবতায়—ব্রেন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়।

ছয় মাস আগেই ইয়াফির ব্রেনে টিউমার ধরা পড়ে। অপারেশনের পর জানা যায়, সে ব্রেন ক্যান্সারে আক্রান্ত। এখন প্রতিটি দিনই তার জন্য মৃত্যুর প্রহর গোনার মতো।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইয়াফি মায়ের কোলে বসে প্রতিদিন ৮-১০ বার আজান দিচ্ছে। মাঝে মাঝেই হাত তুলে বলছে—“আল্লাহ, আমি জানি আমার বুদ্ধি বেশি তাই তুমি এমন রোগ দিয়েছো, কিন্তু আমি কষ্ট পাচ্ছি। আমাকে ভালো করে দাও, আমি বাঁচতে চাই।” শিশুটির এমন আকুতি দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারছেন না মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন, এমনকি প্রতিবেশীরাও।

শিশুটির বাবা ময়ান আলী জানান, গত ডিসেম্বরে হঠাৎ করে ইয়াফির দুই চোখ বাঁকা হয়ে যায় এবং বমি শুরু হয়। পরে পাবনার একটি ক্লিনিকে গেলে ডাক্তাররা ব্রেন টিউমারের কথা জানান। এরপর গরু বিক্রি, ধারদেনা ও মানুষের সহায়তায় ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে প্রায় ৬ লাখ টাকা খরচ করে অপারেশন করান তারা। এতে নিঃস্ব হয়ে যায় পরিবারটি।

কিন্তু অপারেশনের এক সপ্তাহ পরই ইয়াফির অবস্থার আবার অবনতি হয়। এবার তাকে ঢাকার ডেলটা হাসপাতালে নেওয়া হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়ে সে ক্যান্সারে আক্রান্ত। দ্রুত কেমোথেরাপি ও অপারেশন না হলে বাঁচানো সম্ভব নয় বলে জানানো হয়।

চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা। কিন্তু এই দরিদ্র পরিবারটির পক্ষে এই ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়। বাধ্য হয়েই ইয়াফিকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়। এখন সে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর অপেক্ষায়।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে ইয়াফির মা শিফা খাতুন বলেন, “আমার বাচ্চাটা স্কুলে যেতে পারেনি, খেলতেও পারেনি। ও শুধু বাঁচতে চায়। প্রতিদিন আজান দেয়, আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানায়—‘আমাকে বাঁচাও।’ আমি আর কিছু চাই না, শুধু আমার ছেলেটাকে সুস্থ করে দিন।”

ইয়াফির পরিবারের সহযোগিতার জন্য সমাজের বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী। তিনি বলেন, “বিষয়টি খুবই কষ্টকর। আমি খোঁজ নিয়ে সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। তবে সমাজের হৃদয়বান মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে।”

**সহযোগিতা করতে যোগাযোগ:**
০১৭৭৭৪৮৫১৮২ (ইয়াফির পরিবার)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish