বিডিটাইম ডেস্ক
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নাকোবাড়িয়া গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে মহব্বত আলী (৫০) নামে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। তবে এলাকায় থেমে নেই সহিংসতা—প্রতিপক্ষের অন্তত ৩৫-৪০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি গোয়ালঘর থেকে গরু, ধান ও আসবাবপত্রও লুট করা হয়েছে। আতঙ্কে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে একাধিক গ্রাম।
পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে আটক করে। রবিবার দুপুরে আটককৃতদের ৫৪ ধারায় আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জামাল ইউনিয়নের নজরুল ইসলাম মোল্লার সঙ্গে একই এলাকার আরিফ হোসেনের দীর্ঘদিনের সামাজিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। রবিবার সকালে সেই বিরোধ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন নজরুলপন্থী মহব্বত আলী। ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের খবর এলাকায় পৌঁছালে নজরুলের সমর্থকরা প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলা চালায়। ছোট তালিয়ান, সড়াবাড়িয়া ও আশপাশের গ্রামগুলোতে শুরু হয় ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট। ছোট তালিয়ান গ্রামের বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম জানান, “আমার বাড়িতে গ্লাস পর্যন্ত কিছু রাখেনি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছি।”
আটকদের মধ্যে রয়েছেন—লিটন আলী (৪২), মুরাদ বিশ্বাস (৫৪), মেহেদী হাসান (২৬), বাবলু মিয়া (৫০), কামাল হোসেন (৩২), মজিদ (৪০), বরকত আলী মেম্বর (৫৫), ফারুক ও ফিরোজ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সংঘর্ষের সম্ভাবনার কথা আগেই পুলিশকে জানানো হয়েছিল, কিন্তু তারা ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি সংঘর্ষের সময় ও পরে ভাঙচুর চলার সময়ও পুলিশ ইউনিয়নে অবস্থান করছিল।
তবে কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, “এখনো কোনো পক্ষ মামলা করেনি। আটক ৯ জনকে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংঘর্ষের আশঙ্কার বিষয়ে আগাম কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।”
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং পাল্টাপাল্টি হামলার আশঙ্কা রয়েছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে।