বিডিটাইম ডেস্ক
চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় চীন যুক্তরাষ্ট্রে বিরল খনিজ ও চুম্বক সরবরাহ করতে সম্মত হয়েছে।
এর বিনিময়ে চীনের শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার সুযোগ পাবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বুধবার (১১জুন) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ’-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “আমরা ৫৫ শতাংশ শুল্ক পাচ্ছি, চীন পাচ্ছে ১০ শতাংশ। আমাদের সম্পর্ক দারুণ!” — খবর রয়টার্সের।
যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তার বরাতে জানা গেছে, এই চুক্তির অধীনে চীনা পণ্যের ওপর মোট ৫৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ পুরোনো শুল্ক, ২০ শতাংশ ফেন্টানিল পাচারের কারণে এবং বাকি ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক হিসেবে আরোপিত হবে। বিপরীতে চীন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে।
ট্রাম্প আরও জানান, এই চুক্তি তখনই কার্যকর হবে, যখন উভয় দেশের শীর্ষ নেতা—তিনি নিজে এবং চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং—চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন। চুক্তির অংশ হিসেবে চীন বিরল খনিজ ও চুম্বক আগে সরবরাহ করবে, আর যুক্তরাষ্ট্র চীনা শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসার সুযোগসহ প্রতিশ্রুত অন্যান্য সুবিধা প্রদান করবে। ট্রাম্প দাবি করেন, “আমি সব সময়ই চাইতাম চীনের শিক্ষার্থীরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুক।”
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে কয়েক মাস ধরে চলা আলোচনার পর গতকাল মঙ্গলবার কর্মকর্তারা জানান, একটি কাঠামোগত সমঝোতায় পৌঁছানো গেছে। এতে চীন বিরল খনিজের ওপর থেকে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে। তবে দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমিত হবে কি না, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।
লন্ডনে দুই দিনের আলোচনা শেষে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক বলেন, “জেনেভায় গত মাসে হওয়া প্রাথমিক চুক্তির ভিত্তিতে এবার বাস্তব কাঠামো তৈরি হলো।”
উল্লেখ্য, চীনের খনিজ রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপের কারণে এর আগে উভয় দেশের মধ্যে করা কয়েকটি চুক্তি ভেঙে পড়ে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প প্রশাসনও চীনে সেমিকন্ডাক্টর সফটওয়্যার, বিমান ও অন্যান্য প্রযুক্তিপণ্যের রপ্তানি নিষিদ্ধ করে।
বিশ্ববাজারে ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি নতুন করে অস্থিরতা তৈরি করেছে। বড় বড় বন্দরে পণ্যজট, বিভ্রান্তি ও সরবরাহ শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়েছে। যার ফলে অনেক কোম্পানি উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির পাশাপাশি বিক্রিও কমে যাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই চুক্তি স্বল্পমেয়াদে সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিক করলেও দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্য দ্বন্দ্বের মূল সমস্যা এখনো রয়ে গেছে।