Top 5 This Week

স্থায়ী যুদ্ধবিরতির শর্তে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবে হামাসের সাড়া

বিডিটাইম ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবিত সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবে আনুষ্ঠানিকভাবে সাড়া দিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস। তবে এতে একটি স্পষ্ট শর্ত দিয়েছে সংগঠনটি— সেটি হলো, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, যা এতদিন ইসরাইলের জন্য ‘রেড লাইন’ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছিল।

শনিবার (৩১মে) এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, মার্কিন প্রস্তাবের আলোকে তারা ১০ জন জীবিত জিম্মি ও ১৮টি মৃতদেহ ইসরাইলকে ফেরত দিতে প্রস্তুত। এর বিনিময়ে ইসরাইলকে নির্ধারিত সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিতে হবে।

হামাসের ভাষ্য অনুযায়ী, উইটকফের প্রস্তাবের মূল লক্ষ্য একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করা, গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলি সেনা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার, এবং মানবিক সহায়তার প্রবাহ স্থাপন— যা ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য অতীব জরুরি।

বিবৃতিতে হামাস আরও জানায়, তারা ‘একটি জাতীয় পরামর্শ প্রক্রিয়া’ শেষে প্রস্তাবের প্রতি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। যদিও এতে কোনো সরাসরি সংশোধনের দাবি উত্থাপিত হয়নি, আলোচনায় সংশ্লিষ্ট এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, হামাস কিছু নির্দিষ্ট সংশোধনী চাইলেও তাদের প্রতিক্রিয়া মোটের ওপর ইতিবাচক ছিল।

ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, চলতি সপ্তাহের শুরুতে নেতানিয়াহু গাজায় আটক জিম্মিদের পরিবারের সদস্যদের জানান যে, তার সরকার প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছে। হোয়াইট হাউসও বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে একটি বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

উল্লেখ্য, গত মার্চে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে এটাই প্রথম উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। তবুও মূল দ্বন্দ্ব থেকেই যাচ্ছে। ইসরাইলের অবস্থান— হামাসকে অবশ্যই নিরস্ত্র হতে হবে, তাদের সামরিক ও প্রশাসনিক কাঠামো ভেঙে দিতে হবে এবং বাকি ৫৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে— এর পরেই কেবল যুদ্ধ বন্ধের সম্ভাবনা রয়েছে।

অন্যদিকে, হামাস দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে, তারা অস্ত্র ত্যাগ করবে না এবং ইসরাইলকে অবশ্যই গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করে যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে।

ইসরাইলি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলায় দক্ষিণ ইসরাইলে প্রায় ১,২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে গাজায় জিম্মি করে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরই গাজায় ইসরাইলি সামরিক অভিযান শুরু হয়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, টানা অভিযানে ইসরাইল এখন পর্যন্ত ৫৪ হাজার ৪০০-এর বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। পুরো গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেইসঙ্গে মার্চ থেকে ইসরাইলের অবরোধের কারণে গোটা গাজা দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে।

এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহল ক্রমাগত যুদ্ধ থামানোর আহ্বান জানাচ্ছে। তারা বলছে, এখনই সময় উভয় পক্ষের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য চুক্তিতে পৌঁছানো— যা রক্তপাত বন্ধ করে দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীলতার পথ খুলে দিতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish