বিডিটাইম প্রতিবেদক,
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যেবাহী কওমি মাদ্রাসা জামিয়া দারুল উলুম হাটহাজারী মাদ্রাসার ১৪৪৪-৪৫ হি. শিক্ষাবর্ষে তাকমিল জামাতে ‘বুখারী শরীফ’ সবক শেষ হয়েছে।
আজ (২৬ জানুয়ারি) শুক্রবার বাদ জুমা দারুল হাদিস মিলনায়তনে শেষ সবকের আয়োজন করা হয়।
শিক্ষার্থীদের শেষ সবক প্রধান করেছেন আল্লামা শোয়াইব জমিরী। এতে প্রায় আড়াই সহস্রাধিক তরুণ আলেম উপস্থিত ছিলেন।
বাদ জুম্মা বেলা আড়াইটায় হাদিস শাস্ত্রের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও বিখ্যাত গ্রন্থ সহিহ বুখারী শরীফের আখেরি পর্ব আরম্ভ হয়। দরসের শুরুতে আখেরি হাদিসের পুরো সনদসহ মতন পাঠের পর হজরত আল্লামা শোয়াইব জমিরী ছাত্রদের উদ্দেশ্যে হাদিসের উপর বিশদ আলোচনা করেন।
এ সময় তিনি হাদিসের বিশুদ্ধ কিতাব বুখারী শরীফ ও এর রচয়িতা ইমাম আবু আব্দিল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে ইসমাঈল বুখারী (রাহ.)এর বৈশিষ্ট্য বর্ণনার করতে গিয়ে তিনি বলেন,
ইমাম বুখারী (রাহ.) দীর্ঘ ১৬ বছর পর্যন্ত সিয়াম সাধনার মাধ্যমে ১,০৮০ জন উস্তাদ থেকে অর্জনকৃত ৬ লক্ষ হাদিস থেকে বাছাই করে ৭,২৭৫টি হাদিস সংকলন করেছেন। প্রত্যেক হাদিস লেখার পূর্বে গোসল করে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে আল্লাহ্ তাআলার দরবারে এই দোয়া করতেন,
হে আল্লাহ! হাদিস যদি ভুল হয়, তাহলে শুদ্ধতা অন্তরে ঢেলে দিন। রওজায়ে আক্বদাসের পাশে বসে ৩,৩৮৮টি বাব (অধ্যায়) নির্ধারণ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, অল্প কিছু দিনের মধ্যেই আপনারা কর্মমুখর জীবনের দিকে পা বাড়াবেন। সেখানে সাহাবা, তাবেয়ী, তবে-তাবেয়ী, মুহাদ্দিসীন, মুজতাহিদীন, আউলিয়ায়ে কেরাম, আকাবিরে দেওবন্দ ও আকাবিরে হাটহাজারী’র মাসলাকের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন।
উদ্দেশ্যে এক্ষেত্রে আপনাদেরকে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আদর্শকে আকিদা ও আমল, তথা জীবনের সর্বক্ষেত্রে শক্ত হাতে ধারণ করে চলতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আপনারা এমন এক কঠিন সময়ে শিক্ষা সমাপন করে আপন নীড়ে ফিরে যাচ্ছেন, যে সময়ে মানুষ কি বৈষয়িক কি আধ্যাত্মিক; সর্বোপরি বহুমুখী সংকট ও অস্থিরতার শিকার।
আপনারা ইলমী দক্ষতা, খোদাভীতি, তাকওয়া, আল্লাহর উপর ভরসা ও সুন্নাত অনুসরণের মজবুত ভিত্তি নিয়ে দেশ ও জাতির পথপ্রদর্শনে আত্মনিয়োগ করবেন।
তিনি বলেন, আপনারাই হচ্ছেন ভবিষ্যৎ জাতির পথপ্রদর্শক, দ্বিনের ধারক-বাহক। তাই আপনাদেরকে ইলম, আখলাকের প্রতিটি স্তর অতি মেহনত ও পরিশ্রমের মাধ্যমে অতিক্রম করতে হবে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আপনাদেরকে দেশ ও জাতির জন্য সঠিক পথপ্রদর্শক ও হক্কানী আলেমে রাব্বানী হিসেবে কবুল করে নেন।
বয়ান শেষ করে বিদায়ী আলেমদের নিয়ে দেশ ও জাতীয় জন্য দোয়া মোনাজাত ছাত্রদেরকে নিয়ে বিশেষ দোয়া-মুনাজাত পরিচালনা করেন তিনি।