শরীয়তপুর প্রতিনিধি
শরীয়তপুরের মেয়ে ঈশা আলম (১৯)। বিয়ের পরও থেমে থাকেননি পড়ালেখায়। সন্তান গর্ভে নিয়েও নিয়মিত প্রস্তুতি নিয়েছেন এইচএসসি পরীক্ষার জন্য। আর সন্তান জন্মের মাত্র দুই দিন পর, হাসপাতালের শয্যায় বসেই বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন অদম্য এই শিক্ষার্থী।
রবিবার (২৯ জুন) শরীয়তপুর শহরের নিপুণ ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ক্লিনিকে বিশেষ ব্যবস্থায় এইচএসসি পরীক্ষা দেন ঈশা আলম। তিনি শরীয়তপুর সরকারি কলেজের ছাত্রী এবং শহরের পশ্চিম কাশাভোগ এলাকার মাহবুবুর রহমান তুষারের স্ত্রী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন ঈশা। তাঁর কেন্দ্র ছিল শহরের সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজ। গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষা দেন। পরদিন রাতেই প্রসব বেদনা ওঠে এবং সিজারিয়ানের মাধ্যমে একটি কন্যাসন্তান জন্ম দেন তিনি।
রবিবার ছিল বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা। শারীরিক অবস্থার কারণে কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব ছিল না। পরিবারের পক্ষ থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে, চিকিৎসকের পরামর্শ ও কলেজের অনুমতিতে ক্লিনিকেই তাঁর জন্য একটি পরীক্ষাকক্ষের ব্যবস্থা করা হয়। পরীক্ষার সময় সদ্যোজাত শিশু তার দাদির কোলে ছিল।
ঈশা বলেন, “বাচ্চা পেটে থাকতেই পরীক্ষা এসেছিল। আমি ভয় পাইনি। পরিবার পাশে ছিল, সাহস জুগিয়েছে। মনোবল থাকলে মেয়েরা যেকোনো বাধা পেরিয়ে যেতে পারে।”
ঈশার স্বামী মাহবুবুর রহমান তুষার বলেন, “বিয়ের পরও ওর ইচ্ছা ছিল পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার। আমরাও সবসময় ওকে উৎসাহ দিয়েছি।”
কলেজের অধ্যক্ষ ওয়াজেদ কামাল বলেন, “মানবিক কারণে ক্লিনিকে বসেই পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিয়েছি। একজন শিক্ষিকা ও একজন নারী পুলিশ সদস্য পরীক্ষার সময় দায়িত্বে ছিলেন। আমরা চাই ঈশা যেন তার স্বপ্ন পূরণে সফল হয়।”