বুটেক্স প্রতিনিধি
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স)-এর রসায়ন ল্যাবের আসবাবপত্র ভাঙচুর এবং বিভাগের এক শিক্ষকের প্রতি অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারী নূরে আলমের বিরুদ্ধে। তিনি বুটেক্সের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের বুক সর্টার পদে কর্মরত এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের দাবি, নূরে আলম যোগ্যতা ও বিধিবিধান উপেক্ষা করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিভিন্ন সুবিধা ও পদোন্নতি দাবি করে আসছেন। কেউ তার এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করলে, তিনি তাদের হুমকি, অপমান甚至 শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ফলে অনেকেই ভীতির কারণে তার অনৈতিক দাবিগুলো মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. সামিউল ইসলাম জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম গ্রেডের ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার যৌক্তিকতা যাচাইয়ে গঠিত কমিটির তিনি সভাপতি। সরকার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রজ্ঞাপন জারি করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই সুবিধা কার্যকর করা সম্ভব নয় বলে তিনি কর্মচারীদের ব্যাখ্যা দেন। এ নিয়ে নূরে আলম অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং কমিটি থেকে ড. সামিউলকে ইস্তফা দিতে বলেন। তার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করলে, নূরে আলম উত্তেজিত হয়ে ড. সামিউলকে উদ্দেশ্য করে চিৎকার করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে টেবিলে আঘাত করলে কাচ ভেঙে যায়। ড. সামিউল ইসলাম বলেন, তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাবেন।
এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, ৫ আগস্টের পরে নিজেকে ‘জুলাই অভ্যুত্থানের’ নেতা ও বিএনপির সাবেক কর্মী পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অবৈধ পদোন্নতি ও টেন্ডারবাজির সুযোগ আদায়ের চেষ্টা করেছেন নূরে আলম। তার এসব অনৈতিক দাবি প্রত্যাখ্যান করায় সাবেক উপাচার্য ড. শাহ আলিমুজ্জামান বেলালের কার্যালয়ে প্রবেশ করে সিনিয়র শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগও রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ৫ আগস্টের পর নূরে আলম বিশ্ববিদ্যালয়ের টেন্ডার প্রক্রিয়া ও বিল অনুমোদনের ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করছেন। সরবরাহকারীদের সঙ্গে তার যোগসাজশ রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। এলটিএম (LTM) পদ্ধতিতে দুর্নীতির সুযোগ থেকে এসব ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন ওই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, “দায়িত্বপ্রাপ্তরা সততা বজায় রাখলে এসব দুর্নীতির সুযোগ কমে আসবে। আশা করি মাননীয় উপাচার্য বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন।” এছাড়া পুরোনো সাব-স্টেশন অপসারণ প্রকল্পেও নূরে আলমের সংশ্লিষ্টতা তদন্তের দাবি জানান তিনি।
অভিযুক্ত নূরে আলমের বক্তব্য
অভিযোগের বিষয়ে নূরে আলম বলেন, “আমাদের দাবি নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল, যার সভাপতি ছিলেন সামিউল স্যার। কিন্তু তিনি বারবার সভার তারিখ পরিবর্তন করে বিষয়টি দীর্ঘায়িত করছিলেন। তাই আমি আরও ১০-১১ জনকে নিয়ে তার কাছে যাই এবং ব্যাখ্যা চাই। তিনি জানান, এই সিদ্ধান্ত তার হাতে নেই। তখন আমাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তিনি আমাকে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন এবং খারাপ ব্যবহার করেন। তখন আমিও প্রতিক্রিয়া জানাই। এতে টেবিলের কাচ ভেঙে যায়।”
তিনি আরও বলেন, “আমি কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থে আসিনি। কর্মচারী সমিতির সভাপতি হিসেবে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কথা বলতে গিয়েছিলাম। কারও প্রতি আমার ব্যক্তিগত ক্ষোভ নেই।