ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) শিক্ষক সংকট, প্রশাসনিক অভাব ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার মতো নানা সমস্যায় ভুগছে। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ পদ শূন্য থাকায় প্রশাসনিক কার্যক্রম থেমে গেছে। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল না পরিশোধের কারণে ক্যাম্পাসের বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়। শিক্ষার্থীদের তদবিরে পরবর্তীতে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় চালু হলেও পাঠদান পরিস্থিতি এখনও অনিশ্চিত।
২০২২ সালে প্রতিষ্ঠিত সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন ডা. সাইফুল ইসলাম খান। চলতি বছরের মার্চে তিনি সিভিল সার্জন হিসেবে পদোন্নতি লাভ করে অন্যত্র যোগ দেওয়ায় অধ্যক্ষের পদ শূন্য হয়ে পড়ে। এর ফলে প্রশাসনিক কাজকর্ম স্থবির হয়ে যায়।
২৫ জুন ক্যাম্পাসের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়, কারণ ৯ লাখ টাকার বেশি বিল বকেয়া ছিল। অধ্যক্ষ না থাকার কারণে বিদ্যুৎ অফিসের নানান চিঠির বিষয়ে কেউ ব্যবস্থা নেয়নি। পরে শিক্ষার্থীরা পল্লী বিদ্যুৎ, সিভিল সার্জন ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় চালু হয়।
বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে তিনটি ব্যাচে ১৫৬ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছেন। কিন্তু স্থায়ী শিক্ষক না থাকায় কোনো ব্যাচই প্রথম বর্ষ পাড়ি দিতে পারেনি। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের দু’জন অতিথি শিক্ষক সপ্তাহে মাত্র দু’দিন ক্লাস নিচ্ছেন। প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে কোনো ক্লাস পাচ্ছেন না।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, নিরাপত্তাহীনতার কারণে অনেক নারী শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসের বাইরে ভাড়া বাসায় থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। কলেজে মাত্র একজন সিকিউরিটি গার্ড রয়েছেন যিনি দিনের বেলায় ক্যাম্পাসে থাকেন না। এছাড়া শ্রেণিকক্ষ ও আবাসিক হলে পর্যাপ্ত আসবাবপত্র ও ব্যবহারিক যন্ত্রপাতি নেই। ক্যাম্পাসে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অভাব ও ঘন জঙ্গল ও সাপ-পোকামাকড়ের উপদ্রব শিক্ষার্থীদের জন্য সমস্যা বাড়িয়েছে।
সাবেক অধ্যক্ষ ডা. ছাইফুল ইসলাম জানান, প্রতিষ্ঠানের কোনো পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই উদ্বোধন করানো হয়েছিল। তিনি যতদিন দায়িত্বে ছিলেন, ঢাকায় গিয়ে নানা দপ্তরে চেষ্টা করে শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে নিয়েছিলেন।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মহিউদ্দিন মাতুব্বর জানিয়েছেন, জনবল নিয়োগের দায়িত্ব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দপ্তরের।
শিক্ষার্থীরা দ্রুত স্থায়ী অধ্যক্ষ নিয়োগ, শিক্ষক নিয়োগ, নিরাপত্তা ও যন্ত্রপাতি সরবরাহসহ নানা দাবি জানিয়েছেন।