বিডিটাইম ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্যে ইরান-ইসরায়েল চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে গত তিন দিনে অন্তত ৩০টি সামরিক ট্যাংকার বিমান ইউরোপে সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব বিমান মূলত যুদ্ধবিমান ও বোমারু বিমানগুলোকে আকাশে জ্বালানি সরবরাহের কাজে ব্যবহৃত হয়।
ফ্লাইটট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম ফ্লাইটট্রেডার২৪-এর বরাতে জানা গেছে, সরানো বিমানগুলোর মধ্যে অন্তত সাতটি কেসি-১৩৫ মডেলের ট্যাংকার বিমান, যেগুলো স্পেন, স্কটল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এই পদক্ষেপ এমন এক সময় নেওয়া হলো, যখন ইসরায়েল গত শুক্রবার ইরানে বিমান হামলা চালায় এবং তারপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের বিমান সরানো সরাসরি ওই সংঘাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
তবে সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের গতিবিধি খুবই অস্বাভাবিক এবং ইঙ্গিতপূর্ণ। রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউট (RUSI)এর জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক জাস্টিন ব্রঙ্ক বলেন, “এটি দেখায় যে যুক্তরাষ্ট্র আগামী সপ্তাহগুলোতে অঞ্চলে তীব্র সামরিক সহায়তার জন্য বিকল্প প্রস্তুতি নিচ্ছে।”
অন্যদিকে আয়ারল্যান্ডের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাবেক প্রধান ভাইস-অ্যাডমিরাল মার্ক মেলেট মনে করেন, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর “কৌশলগত অস্পষ্টতা নীতি”-র অংশ হতে পারে, যার মাধ্যমে ইরানকে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় ছাড় দিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র এরইমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে এফ-১৬, এফ-২২ ও এফ-৩৫ মডেলের উন্নত যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে বলে রয়টার্স-কে নিশ্চিত করেছেন তিনজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা। ইউরোপে সরানো ট্যাংকার বিমানগুলো এসব যুদ্ধবিমানকে আকাশেই জ্বালানি সরবরাহ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে মার্কিন ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইসরায়েলের চলমান অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে। তিনি আরও জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ঠেকাতে নতুন পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এই সামরিক প্রস্তুতিগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।