Top 5 This Week

ঈদের দিনে মধুমতির বুকে উৎসবের ঢেউ

 

ছুটির দিনে প্রকৃতির টানে মানুষ ছুটে চলে—আর ঈদের মতো আনন্দের উৎসব এলে তো কথাই নেই! এমনই এক ঈদের সন্ধ্যায় মাগুরার মহম্মদপুরে অবস্থিত শহিদ আহাদ সুমন সেতুতে তৈরি হয় মানুষের ঢল। সেতুর দুই পাশে যেন ঈদের খুশির হাট বসে—চোখে পড়ে শিশুদের হাতে বেলুন, আলো ঝলমলে খেলনা আর চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে পটকা ভাজার মনভোলানো গন্ধ।

মধুমতি নদীর ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এই সেতুটি শুধু দুটি জেলার মধ্যে সংযোগ নয়, এটি হয়ে উঠেছে মানুষের বিনোদনের নতুন মিলনকেন্দ্র। ছবিতে দেখা যায়, লোকজন যেন ঢল নামিয়েছে—মোটরসাইকেল, অটোরিকশা, সাইকেল কিংবা পায়ে হেঁটে মানুষ এসেছে দূর-দূরান্ত থেকে। কেউ এসেছেন মাগুরা শহর থেকে, কেউ ফরিদপুর বা নড়াইল থেকে, শুধুই ঈদের দিনটা সেতুর বুকজুড়ে কাটাতে।

সেতুর পাশের নদীতে বড় বড় নৌকা ভেসে বেড়ায়, আর স্পিডবোট ছুটে চলে তরুণদের চিৎকারে উচ্ছ্বসিত হয়ে। নদীর পাড়ে গাছপালা ঘেরা সবুজের ছায়ায় শিশুরা খেলে, তরুণ-তরুণীরা সেলফি তোলে আর বয়স্করা বসে থাকেন নিরিবিলিতে—নিজেকে প্রকৃতির কাছাকাছি অনুভব করে।

সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে সেতু ঝলমল করে উঠে আলোকসজ্জায়। হকাররা বিক্রি করছেন বাদাম, পটকা, বাচ্চাদের খেলনা। কোথাও আবার দেখা যায় কেউ গানের বাদ্যযন্ত্র নিয়ে তালে তালে গান গাইছেন। মনে হয়, শহরের বাইরে যেন এক উৎসবমুখর নগরীর আবির্ভাব হয়েছে।

শহিদ আহাদ সুমন সেতু—যার আগের নাম ছিল ‘শেখ হাসিনা সেতু’—তার নামকরণ ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এক আবেগময় অধ্যায়। ২০২৪ সালের ২৪ জুলাইয়ের আন্দোলনে শহিদ হওয়া দুই কৃতি সন্তানের স্মরণে এই নতুন নামটি আজ আরও তাৎপর্য বহন করে।

মধুমতির বুকজুড়ে এমন প্রাণবন্ততা দেখতে চাইলে, পরের ঈদে বা শুক্রবার বিকেলে ঘুরে আসতে পারেন শহিদ আহাদ সুমন সেতুতে। নদীর হাওয়া, মানুষের ভিড় আর ছোট ছোট হাসিমুখ—সব মিলিয়ে মনে হবে, জীবন যেন এই সেতুর মাঝেই জমে উঠেছে।

হাফেজ মো. মনিরুল ইসলাম
শিক্ষার্থী, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish