বিডিটাইম ডেস্ক
সড়কে দুর্ঘটনায় ঝরল আরও ১০ প্রাণ। এর মধ্যে এক নবজাতক রয়েছে, যে পৃথিবীর আলো দেখেছিল মাত্র একদিন আগে।
বরগুনার আমতলীতে শনিবার (২২জুন) দুপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিল নবজাতকটি। মারা যান তার মা মোসাদ্দিকা বেগম, নানা আব্দুল আজিজ খান ও দাদি খালেদা বেগম। শনিবার রাত ৯টার দিকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে নবজাতক।
মধ্য সোনাখালী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আজিজ খানের মেয়ে মোসাদ্দিকা শুক্রবার রাতে তৃতীয় কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। জন্মের পর থেকেই শিশুটির শ্বাসকষ্ট ছিল। চিকিৎসকের পরামর্শে শনিবার দুপুর ২টার দিকে শিশুটিকে পটুয়াখালী হাসপাতালে নেওয়ার পথে কেওয়াবুনিয়া হাই স্কুলের উত্তর পাশে তাদের বহনকারী অটোরিকশাটি একটি বাসের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান আজিজ খান ও খালেদা বেগম। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মোসাদ্দিকা ও তার নবজাতক কন্যা।
ঘটনায় আহত হন মোসাদ্দিকার স্বামী মো. জাহিদুল ইসলাম এবং অটোরিকশাচালক মো. আব্দুল হক। তাদের পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মো. ওয়াহিদ শামীম জানান, নবজাতকটি মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাত পেয়েছিল। পাশাপাশি দীর্ঘ সময় পানিতে পড়ে থাকায় শরীরের তাপমাত্রাও ঝুঁকিপূর্ণভাবে কমে গিয়েছিল। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টার পরও শিশুটিকে বাঁচানো যায়নি।
এদিকে, রোববার গোপালগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে আরও কয়েকটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান সাতজন।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের টুকুবাজার এলাকায় রোববার বেলা ১১টার দিকে সড়ক পার হতে গিয়ে বাসের ধাক্কায় নিহত হন সরোয়ার খাঁ (৯০)। এছাড়া, গোপীনাথপুরে শনিবার মধ্যরাতে দুটি দুর্ঘটনায় মারা যান বিপুল কুমার পাল (৫২) ও শাওন শেখ (১৮)।
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে কনটেইনারবাহী লরির পেছনে ড্রাম ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ হারান চালক ফারুক হোসেন (৪০) ও সহকারী ররিউল ইসলাম (৩৫)। দুর্ঘটনাটি ঘটে রোববার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ঠাকুরদিঘি এলাকায়।
ময়মনসিংহের তারাকান্দায় বাসের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চারটি গাড়িতে ধাক্কা লাগলে নিহত হন আরও দুজন। তারা সিএনজি অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাগুন্দা এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
তারাকান্দা থানার ওসি মো. টিপু সুলতান জানান, দুর্ঘটনার পর মহাসড়কে দীর্ঘ সময় যান চলাচল বন্ধ ছিল। পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের একাধিক দল উদ্ধারকাজে অংশ নেয়।