কুবিতে অনিয়মের দায় উপাচার্যের উপর চাপালেন ট্রেজারার

0
29
Spread the love

কুবি প্রতিনিধি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের বিরুদ্ধে, নীতিমালা ছাড়াই ভাইস চ্যান্সেলরের নামে বৃত্তি প্রদান, বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউজ নিজের দখলে নেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-২০০৬ ও ইউজিসির আইন অমান্য করে শিক্ষক, পদোন্নতিতে বৈষম্য সৃষ্টির, অভিযোগ তুলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।

 

গত বুধবার (৩১ জানুয়ারি) “সার্ভিস রুলস, একাডেমিক রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন” (পরীক্ষা, ছুটি এবং আপগ্রেডেশন বিধি) প্রশিক্ষণের রিসোর্স পারসন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: আসাদুজ্জামানের কাছে এ-সব বিষয় শিক্ষকরা প্রশ্ন তুললে তিনি সকল অনিয়মের দায় উপাচার্যের বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “এসব সিদ্ধান্ত আমি নিতে পারি না। হায়ার অথরিটি আছে; বোর্ড আছে। উপাচার্য এ ব্যাপারে ভাল বলতে পারবেন।”

 

প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম বলেন, ‘আমরা ট্রেজারারের কাছে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর পিএইচডি নথিভুক্তি, উপাচার্যের পছন্দের ব্যক্তিদের পদোন্নতি স্থায়ী করন এবং সকল শর্ত পূরণ হলেও অপছন্দের শিক্ষকদের পদোন্নতি প্রদানে অযাচিত শর্তারোপের বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তিনি বিব্রতবোধ করেন। তিনি বলেন, “এসব সিদ্ধান্ত আমি নিতে পারি না।

প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদি হাসান জানান, ‘ আমি কোষাধ্যক্ষের কাছে জানতে চাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিয়ম আছে, কিন্তু এসব নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে একাধিক ব্যক্তিকে কোন আইনে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে? যোগ্যতা থাকার পরও কেন প্রমোশন আটকিয়ে দেওয়া হচ্ছে? এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ খরচে গেস্ট হাউজ রাখা হয়েছে, কিন্তু শিক্ষকদের বঞ্চনায় ডুবিয়ে উপাচার্য একাই সেটি কিভাবে দখল করতে পারেন? যে পদ্ধতিতে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে সেটার খাত নিয়েও কোষাধ্যক্ষকে প্রশ্ন করলে তিনি সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সহযোগী অধ্যাপক বলেন, শিক্ষক পদোন্নতির নীতিমালা অনুযায়ী আবেদনের সময় তো Q1 এবং Q2 নীতিমালা ছিল না। কিন্তু এসব নিয়ে পদোন্নতির সময় আমাদের আটকে দিচ্ছে। এসব নিয়ে যখন প্রশ্ন করা হয় তখন কোষাধ্যক্ষ বলেন “এসব বিষয়ে আমার হাতে থাকে না। এখানে হায়ার অথরিটি আছে। যাচাই বাছাই বোর্ড আছে তাদের উপর নির্ভর করে।”

উপাচার্যের উপর দায় চাপানোর বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: আসাদুজ্জামান বলেন, উপাচার্যের উপর দায় চাপানোর বিষয়টি সম্পূর্ণ অসত্য। শিক্ষক নিয়োগ এবং আপগ্রেডেশনের বিষয়টি হায়ার বোর্ডের বিষয়। সেখানে উপাচার্যসহ অন্যান্য বোর্ড মেম্বাররা সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে কাছের লোকদের সুযোগ দেয়া কিংবা দূরের লোকদের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি সম্পূর্ণ ওনাদের। আমি সেখানে ছিলামও না। কি হয়েছে জানিও না।

তিনি আরও বলেন, একটা সময় ভর্তি পরীক্ষার লভ্যাংশ থেকে শিক্ষকদের একটি অংশ দেয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে সেই অর্থ দিয়ে মেধাবৃত্তি দেয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।” তবে গেস্ট হাউজের অব্যবস্থাপনার বিষয়ে উপাচার্যের সাথে কথা বলবো।

কোষাধ্যক্ষের দায় ছাপানোর বিষয়ে কথা বলতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের দপ্তরে গেলে তিনি অন্যান্য সাক্ষাৎ প্রার্থীদের সাথে কথা বললেও প্রতিবেদককে ব্যস্ততা দেখিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পরও কথা বলেন নাই । এরপর উপাচার্যের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কোন সাড়া দেননি। মুঠোফোনে ক্ষুধেবার্তা পাঠালেও তার উত্তর পাওয়া যায়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here