Top 5 This Week

কুবিতে পূর্ব ঘটনার জেরে লোক প্রশাসন বিভাগের  শিক্ষার্থীকে মারধর

Spread the love

 

কুবি প্রতিনিধি,

পূর্বের ফুটবল খেলায় মারামারির জের ধরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাহিনুল হাসানকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ফার্মাসি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াসিম সাকিব, আইসিটি বিভাগের একই ব্যাচের শিক্ষার্থী আনোয়ার জাহেদ ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী সেজান খানের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের পাশে এক হোটেলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিসমিল্লাহ হোটেলে মাহিনুল দুপুরের খাবার শেষ করে হোটেল থেকে বাহির হওয়ার সময় ওয়াসিমসহ কয়েকজন মাহিনুলের পথ আটকায় এবং কোন ব্যাচ তা জানতে চায়। ওয়াসিম বলে ফুটবল খেলার সময় তুই আমাকে মারধর করছিস। মাহিনুল তখন অস্বীকার করলে পাশে থাকা আনোয়ার জাহেদ উত্তেজিত হয়ে লাঠি দেখিয়ে মাহিনুলকে তাদের সঙ্গে যেতে বাধ্য করে। পরে হোটেলের পাশে গুদামের সামনে নিয়ে গিয়ে আনোয়ার জাহেদ, ওয়াসিম ও সেজান মাইনুলকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এসময় তারা লাঠি ও চাবির রিং দিয়ে মাহিনুলের শরীরে ও মাথায় আঘাত করে, ফলে মাথা থেকে রক্তক্ষরণ হয়। রক্তাক্ত অবস্থায়ও তারা মাহিনুলকে আটকে রাখার চেষ্টা করে, তবে ১৫তম ব্যাচের সাইফসহ কয়েকজন এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

আঘাতের বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডাক্তার আতাউর রহমান বলেন, ‘যখন সে এসেছিল তার মাথায় দিয়ে রক্ত পড়ছিল। মাথায় ও হাতে আঘাত পেয়েছে । তাই দুইটা এক্সরে পরীক্ষা করতে দিয়েছি। হাতের আঘাতটি বড় কিছু হতে পারতো মিনিমাম ৬ মাস কোনো কাজ করতে পারতো না। এখন তার বিশ্রাম প্রয়োজন। আপতত কয়েকদিন হাত দিয়ে ভারী কাজ করা যাবে না।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মাহিনুল বলেন, আমি খাবার খেয়ে বের হওয়ার সময় ওয়াসিম ভাই, আনোয়ার ভাই ও সেজান ভাই পথ আটকায়। ওনারা আমি কোন বিভাগের জিজ্ঞেস করে। তখন লোক প্রশাসন ১৭ ব্যাচ বলাতে আমাকে এদিকে আয় বলে তারা তিনজন মিলে বেধড়ক কিল, ঘুসি মারে। এক পর্যায় আমি মাটিতে পড়ে গেলে প্রথমে পা দিয়ে বেধড়ক লাথি মারে তারপরে আমার মাথায় তিনজনে লাটি ও চাবির রিং দিয়ে আঘাত করে। আমার মাথা দিয়ে অনেক রক্ত বের হয়েছে। পরে বিভাগের শিক্ষার্থীরা আমাকে কুমিল্লা মেডিকেল হসপিটালে নিয়ে আসে। বিচারের দাবিতে আমি প্রশাসন বরাবর মৌখিক অভিযোগ দিয়েছি এবং রবিবারে লিখিত অভিযোগ পত্র জমা দিব।

মারধরের বিষয়ে আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী আনোয়ার জাহেদ বলেন, আমি কাউকে আঘাত করি নাই। আমি তাদের মারামারি বন্ধ করতে চেয়েছি। তাহলে মাহিনুলকে কে বা কারা মারছে এমন প্রশ্নে জাহেদ বলেন, ‘আমি মারিনি। ওয়াসিম মাহিনুলকে মারধর করেছে।’

অভিযুক্ত ফার্মাসি বিভাগের ১৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ওয়াসিম সাকিব বলেন,“গতকালের খেলার মাঠের ঘটনার সূত্র ধরে মাহিনুল আমাকে হেনস্তা করার চেষ্টা করে। সে আমাকে উদ্দেশ্য করে একটি কটূক্তি করে বলে, ‘গতকাল যাকে মারছিলাম, সে আছে কিনা দেখ।’ এই মন্তব্যের মাধ্যমেই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। এরপর, যখন পরিচয় জানতে চাওয়া হয়, তখন কথা কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি শুরু হয়। এই ঘটনাটি আমার সাথেই ঘটেছে, আমার বন্ধুবান্ধব কেউ এই ঘটনায় জড়িত ছিল না।’

সার্বিক বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুল হাকিম বলেন, ‘শিক্ষার্থীর সাথে আমার কথা হয়েছে সে মেডিকেল হসপিটালে ভর্তি আছে। আমি মৌখিক একটা অভিযোগ পেয়েছি। আমরা লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিব।’

উল্লেখ্য ; গতকাল ১৪ নভেম্বর আন্ত:বিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টে লোক প্রশাসন বনাম এআইএস বিভাগের খেলার শেষদিকে বল শট নেওয়া নিয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের একজন খেলোয়াড় ফার্মেসি বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ও ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে প্রক্টরিয়াল বডি বরাবর দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দেয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish