Top 5 This Week

কুবিতে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

Spread the love

কুবি প্রতিনিধি,

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে লোকপ্রশাসন বিভাগ ও ফার্মেসির বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাঝে বলকে কেন্দ্র করে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এই নিয়ে প্রক্টর বরাবর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) এসব অভিযোগপত্র জমা দেন তারা।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে লোক প্রশাসন এবং এআইএস টিমের আন্তঃবিভাগ ফুটবল খেলায় রেফারি ও সহকারী রেফারির মতানৈক্য সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে খেলায় দুই বিভাগে খেলোয়াড়দের মধ্যে হট্টগোল তৈরি হলে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ক্রীড়া কমিটির আহ্বায়ক রেফারি পরিবর্তন করে পুনরায় খেলা চালু করেন। খেলা শেষ হওয়ার ৫ মিনিট আগে একটি বল শট নিয়ে ফার্মেসি ও লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের মাঝে হাতাহাতি ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

ফার্মেসির বিভাগের অভিযোগপত্রে শিক্ষার্থীরা বলেন, লোক প্রশাসন বনাম একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন স্টাডিস বিভাগের চলমান খেলায় একটি বল মাঠের বাহিরে এলে ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত (১৭তম আবর্তন) বলটিকে মাঠে ফেরত দেয়। তখন লোকপ্রশাসন বিভাগের মাহফুজ (১৫), মাহবুবুর রহমান শুভ (১৬), মাহিনুল ইসলাম (১৭), লিওন (১৭) সহ বাকি খেলোয়াড় এবং উক্ত বিভাগের কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী তার উপর তেড়ে আসে এবং মারতে উদ্ধত হয়। সেসময় ফার্মেসি বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী ইয়াসিনকে বাঁচাতে আসলে তাদের উপরও খেলোয়াড়সহ শিক্ষার্থীরা চড়াও হয় এবং মর্মান্তিকভাবে আহত করে।

অভিযোগ পত্রে আরও বলা হয়, উক্ত বিষয় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে লোকপ্রশাসন বিভাগকে শাস্তির আওতায় এনে চলমান ফুটবল টুর্নামেন্ট ও আগামী এক আসর থেকে বাতিল এবং জড়িত শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম ছয় মাসের বহিষ্কারের আবেদন জানাচ্ছি।

আর এদিকে লোক প্রশাসন বিভাগের একটি অভিযোগ পত্রটি সাংবাদিকদের হাতে এসেছে। অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘খেলা শেষের দিকে বল আউট লাইনের কাছে আসলে ফার্মেসি বিভাগের এক খেলোয়াড় বল শট করে মাঠের অন্য প্রান্তে পাঠিয়ে দেয়। অথচ তাদের খেলা আমাদের পরে হওয়ার কথা রয়েছে। কেন শট দিয়েছে এটা জিজ্ঞেস করলে? প্রতিউত্তরে সে বলে দিয়েছি তাতে সমস্যা কী বলে আমাদের টিমের প্লেয়ার মাহফুজের উপর ক্ষিপ্ত হয়। এতে দুইজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডার হয়। একপর্যায়ে ফার্মেসি বিভাগের ১৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ওয়াসিমসহ ৩০-৪০ জন শিক্ষার্থী দৌড়ে এসে আমাদের প্লেয়ারের উপর হামলে পড়ে। পরবর্তীতে আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থী আমাদের প্রতিহত করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ ঘটনা নিবৃত্ত করার জন্য আমাদের টিমের খেলোয়ারসহ সকলে সর্বাত্মক চেষ্টা করেন।‘

ফার্মেসি ফুটবল টিমের অধিনায়ক রিফাত বলেন, ‘এআইএস আর লোক প্রশাসনের খেলা চলাকালীন সময়ে একটা বল বাহিরে এসেছিল। আমাদের একজন প্লেয়ার বলটা শর্ট দিয়ে তাদের কাছে দিয়েছিল। ওরা কি কারণে অ্যাগ্রেসিভ হয়েছিল জানি না। ওরা হয়ত আমাদের জুনিয়র প্লেয়ারকে ধাক্কা দিয়েছিল, বিষয়টা ওয়াসিমের গায়ে লেগেছে তাই সে গিয়েছিল। তারপরে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ১৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ওয়াসিমকে মারছিল। আমরা প্রক্টর বরাবর একটা লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।‘

তবে এটা নিয়ে উল্টো অভিযোগ করে লোকপ্রশাসন বিভাগের ফুুটবল টিমের অধিনায়ক খন্দকার মুরসালিন বলেন, আমাদের একটি বল আউট লাইনের কাছের বল আরাফাত (১৭তম) বল শট করে অন্য প্রান্তে পাঠিয়ে দেয়। এছাড়া আমাদের হাতে সময় আছে কম। কেন শট দিয়েছে এ কথা জিজ্ঞেস করলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের টিমের প্লেয়ার মাহফুজের দিকে মারমুখী ভঙ্গিমায় তেড়ে আসে। পরবর্তীতে দুইজনের বাকবিতণ্ডায় একপর্যায়ে ফার্মেসি বিভাগের খেলোয়ারসহ শিক্ষার্থীরা হামলা করে আমাদের টিমের উপর। আমরা প্রক্টরিয়াল বডির বরাবর অভিযোগ দিয়েছি, আমরা এটার সুষ্ঠু বিচার চাই।

ক্রীড়া কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন বলেন, ‘লোকপ্রশাসন ও একাউন্টিং বিভাগের খেলা চলাকালীন গোল নিয়ে প্রধান রেফারি এবং সহকারী রেফারির মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়। তাই খেলা পরিচালনা করার স্বার্থে আমরা আইনানুযায়ী প্রধান রেফারিকে পরিবর্তন করি।’

হাতাহাতির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন,” যেহেতু এই ঘটনা মাঠের বাহিরে ঘটেছে তাই এটার দায়ভার আমার না। ক্যাম্পাসের ভিতরে কোনো ঘটনা ঘটলে সেটা প্রক্টরিয়াল বডি দেখবে।”

প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুল হাকিম বলেন, আমরা ফার্মেসি বিভাগের একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয় নিয়ে আমরা বসবো।

তবে আরেকটি অভিযোগের বিষয়ে সহকারী প্রক্টর মাহমুদুল হাসান বলেন, লোক প্রশাসন বিভাগের অভিযোগের বিষয়ে আমাকে জানিয়েছে। আমরা প্রক্টরিয়াল বডি বসে উভয় পক্ষের অভিযোগগুলো তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নিব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish