বিডিটাইম ডেস্ক
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অন্যতম রূপকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের স্মরণে নির্মিত ম্যুরাল কুমিল্লায় ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ম্যুরালটি কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে স্থাপিত ছিল।
বুধবার (২৫ জুন) সকাল থেকে ম্যুরাল ভাঙার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এবং রফিকুল ইসলামের পরিবারের উদ্যোগে একটি শহীদ মিনার ও ম্যুরাল স্থাপন করা হয়। ম্যুরালটি স্থাপন করা হয় কুমিল্লা নগরীর রাজবাড়ি এলাকায় কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশে। রফিকুল ইসলামের পৈতৃক বাড়িও একই এলাকায়।
প্রতিষ্ঠানটির সাবেক অধ্যক্ষ নারগিছ আক্তার জানান, “রফিকুল ইসলামের ভাগনে অর্থ সহায়তা করেন ম্যুরাল ও শহীদ মিনার নির্মাণে। এরপর থেকে শিক্ষক ও স্থানীয়রা এ স্থাপনাটি রক্ষণাবেক্ষণ করছিলেন।”
ঘটনার পর স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ ম্যুরাল পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার শফিউল আহমেদ বাবুল বলেন, “রফিকুল ইসলামের অবদান অপরিসীম। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা জেলা প্রশাসনের কাছে ম্যুরাল পুনঃস্থাপনের জোর দাবি জানাচ্ছি।”
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়ছার সাংবাদিকদের বলেন, “বিষয়টি আগে জানতাম না। তবে আমরা রফিকুল ইসলামের স্মৃতি রক্ষায় সব ধরনের পদক্ষেপ নেব। ম্যুরাল পুনঃস্থাপনসহ যা যা করণীয়, তা করা হবে।”
১৯৯৮ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি, রফিকুল ইসলাম জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনানকে চিঠি দিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার প্রস্তাব দেন। পরে তাঁর নেতৃত্বে গঠিত ‘এ গ্রুপ অব মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ সংগঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সমর্থন আদায়ে কাজ শুরু করেন।
এর ধারাবাহিকতায় ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
ঘটনার বিষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দা ভয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি বলে জানা গেছে। তবে সামাজিক মাধ্যমে নিন্দা অব্যাহত রয়েছে।