ছবি সংগৃহিত
বিশ্ব জাহানের প্রতিপালক মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নৈকট্যলাভে শ্রেষ্ঠ মাধ্যম কুরবানি। যা সামর্থ্যবান মুসলিম নর-নারীর উপর ওয়াজিব। মৌলিক ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত এ ইবাদতের প্রচলন প্রথম মানব ও প্রথম নবী হযরত আদম (আ) থেকে সকল যুগে ছিল তবে তা আদায়ের পন্থা ছিল ভিন্ন। উম্মতে মুহাম্মদীর কুরবানি মিল্লাতে ইবরাহীমীর সুন্নাহ।সেখান থেকেই এসেছে এই কুরবানি।কুরবানির মাধ্যমে শুধু আল্লাহর নৈকট্য নয় গরিব-দুঃখী, পাড়া-প্রতিবেশীর আপ্যায়নের ব্যবস্থাও হয়।এই কুরবানীতে রয়েছে আল্লাহ ও তার রাসুলের শর্তহীন আনুগত্যের পাশাপাশি আল্লাহর জন্য ত্যাগ ও বিসর্জনের শিক্ষা।কুরবানির রয়েছে সুস্পষ্ট কতগুলো নীতিমালা।
কুরবানির পরিচয়
কুরবানি শব্দটি এসেছে আরবি ‘কুরবানা’ থেকে যার অর্থ -নৈকট্য লাভ করা,প্রিয় বস্তুকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ করা।শরিয়তের পরিভাষায় কুরবানি হচ্ছে নির্দিষ্ট দিনে (অর্থাৎ,যিলহজ মাসের ১০,১১,১২ ও ১৩ তারিখে)নির্দিষ্ট ব্যক্তির আল্লাহর সন্তুষ্টি ও প্রতিদানের আশায় নির্দিষ্ট পশু জবেহ করা।
কুরবানির ইতিহাস
পৃথিবীতে প্রথম কুরবানি সংগঠিত হয়েছিল আদি পিতা হজরত আদম (আ)-এর পুত্রদ্বয় হাবিল এবং কাবিলের মাধ্যমে। তবে উম্মতে মুহাম্মদীর কুরবানির সূচনা হজরত ইবরাহীম (আ) -এর কুরবানি থেকে।
কুরআনে মহান আল্লাহ সে কাহিনীর বর্ণনা দিয়েছেন-ইবরাহীম (আ) যখন আমার কাছে দুআ করল-“হে আমার প্রতিপালক তুমি আমাকে এক সৎকর্মশীল পুত্র সন্তান দান করো।অতঃপর আমি তাকে এক সৎকর্মশীল পুত্র দান করলাম।অতঃপর সে যখন তার পিতার সাথে চলাফেরা করার বয়সে পৌঁছল, তখন ইব্রাহিম (আ:) বলল,বৎস!আমি স্বপ্নে দেখেছি যে,আমি তোমাকে জবেহ করছি।এখন বল তোমার অভিমত কি?সে বলল,’হে পিতা!আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে আপনি তাই করুন।আল্লাহ চাইলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন।দু’জনেই যখন আনুগত্যে মাথা নুইয়ে দিল আর ইবরাহীম তাঁকে কাত করে শুইয়ে দিল। তখন আমি তাকে ডাক দিলাম,’হে ইবরাহীম! স্বপ্নে দেয়া আদেশ তুমি সত্যে পরিণত করে ছাড়লে।এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদের প্রতিদান দিয়ে থাকি।অবশ্যই এটি ছিল একটি সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আমি এক মহান কুরবানির বিনিময়ে পুত্রটিকে ছাড়িয়ে নিলাম আর আমি তাঁকে পরবর্তীদের মাঝে স্মরণীয় করে রাখলাম। ইবরাহীমের উপর শান্তি বর্ষিত হোক!সৎকর্মশীলদের আমি এভাবেই প্রতিদান দিয়ে থাকি। সে ছিল আমার মু’মিন বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত। (সূরা আস-সফফাত,আয়াত-১০০-১১১)।”
সেই থেকে মুসলমানরাও তেমনি জিলহজ মাসের দশ তারিখে তথা ঈদুল আযহার দিনে পশু কুরবানি মাধ্যমে নিজেদের প্রিয় জানমাল আল্লাহর পক্ষে কুরবানি করার সাক্ষ্য প্রদান করে।মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহীম (আ:)-এর সেই কুরবানিকে শাশ্বত রূপদানের জন্যই আল্লাহ ও তাঁর রাসূল(স:) এই দিনে মুসলমানদের ঈদুল আযহা উপহার দিয়েছেন এবং কুরবানি করার নির্দেশ দিয়েছেন।
কুরবানির হুকুম
কুরবানির হুকুম নিয়ে আলেমদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। কারো মতে ওয়াজিব আবার কেউ বলেছেন সুন্নত।
প্রথম মত – ইমাম আওযায়ী,ইমাম লাইস, ইমাম আযম আবু হানিফা(রহ) প্রমুখের মতে কুরবানি ওয়াজিব।)
দলিল-
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা বলেছেন-“তোমরা তোদের প্রভুর উদ্দেশ্যে সালাত আদায় কর এবং কুরবানি কর। “(সূরা কাওসার,আয়াত-২)
রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন- “যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কুরবানি না করে সে যেন আমার ঈদগাহের ধারেকাছেও না আসে” (আহমদ ও ইবনে মাজাহ-৩৫১৬)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্যত্র বলেছেন-“হে মানবসকল! প্রত্যেক দায়িত্ব হল প্রতি বছর কুরবানি দেয়া। (ইবনু মাজাহ-৩১২৫)
দ্বিতীয় মত- ইমাম মালেক ও শাফেয়ী (রহ)-সহ অধিকাংশ আলেমের মতে কুরবানি সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। কিন্তু এ মতের প্রবক্তারা আরো বলেছেন,সামর্থ্য থাকা অবস্থায় কুরবানি পরিত্যাগ করা মাকরুহ। যদি কোন জনপদের লোকেরা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও সম্মিলিতভাবে কুরবানি পরিত্যাগ করে তবে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে।কেননা,কুরবানি ইসলামের একটি মহান নিদর্শন।
তাদের দলিল-
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,”তোমাদের মাঝে যে কুরবানি করতে চায়, জিলহজ্জ মাসের চাঁদ দেখার পর সে যেন কুরবানি সম্পন্ন করার আগে তার কোন চুল ও নখ না কাটে।” (মুসলিম-১৯৭৭)
এ হাদিসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী ‘যে কুরবানি করতে চায়’ দ্বারা বুঝা যায় কুরবানি ওয়াজিব নয়।
সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর কুরবানি ওয়াজিব। কেননা দ্বিতীয় মত অপেক্ষা প্রথম মত অর্থাৎ যারা বলেছে কুরবানি ওয়াজিব তাদের দলিল অধিকতর শক্তিশালী। ইমাম ইবনে তাইমিয়ার মত এটাই।
কোরবানি কার উপর ওয়াজিব
প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী যে ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ তথা সাড়ে সাত তুলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন তুলা রূপা অথবা সমমূল্য পরিমাণ অর্থ-সম্পত্তির মালিক হবে তার উপর কুরবানি ওয়াজিব।
কুরবানির সময়
কুরবানির জন্য নির্ধারিত সময় রয়েছে।এ সময়ের পূর্বে কুরবানি করলে যেমন আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবেনা তেমনি পরে করলেও আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হবে না।
কুরবানির সময় হয় ঈদুল আযহার সালাত আদায়ের পর থেকে।ঈদের সালাত আদায়ের পূর্বে কুরবানি করলে তা শুদ্ধ হবে না। হাদীসে এসেছে,
হযরত বারা ইবনে আযেব (রা:)হতে বর্ণিত তিনি বলেন,আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ (স:)খুতবাতে বলেছেন, এ দিনটি আমরা শুরু করব সালাত দিয়ে।অতঃপর সালাত থেকে ফিরে আমরা কুরবানি করব।যে এমন আমল করবে সে আমাদের আদর্শ সঠিক ভাবে অনুসরণ করল।আর যে এর পূর্বে জবেহ করল সে তার পরিবারবর্গের জন্য মাংসের ব্যবস্থা করল কুরবানির কিছু আদায় হল না।”(সহিহ বুখারী-৯৬৫)
তবে ঈদিল আযহার সালাত শেষ হওয়ার সাথে সাথে কুরবানির পশু জবেহ না করে সালাতের খুতবা দুটি শেষ হওয়ার পর জবেহ করা উত্তম। রাসূল (স:) এর হাদীস থেকে এরকমটাই জানা যায়।
হাদীসে এসেছে-“হযরত জুনদুব ইবনে সুফিয়ান আল বজলী (রা:) হতে বর্ণিত তিনি বলেছেন, নবী (স:) কুরবানির দিন সালাত আদায় করলেন অতঃপর খুতবা দিলেন তারপর পশু জবেহ করলেন।”(বুখারী-৯৮৫)
কুরবানির জন্য নির্ধারিত সময় হচ্ছে যিলহজ মাসের ১০-১৩ তারিখের সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত। সুতরাং পশু কুরবানি করা যায় তিন দিন(যিলহজ মাসের দশ,এগারো ও বারো তারিখ)। এই তিন দিন ছাড়া অন্য দিনে কুরবানি করলে তা সহিহ হবে না। মহান আল্লাহর বাণী-“যাতে তারা তাদের কল্যাণময় স্থানগুলোতে উপস্থিত হতে পারে এবং তিনি তাদের চতুষ্পদ জন্তু হতে যা রিজিক হিসেবে দান করেছেন তার উপর নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে।”(সূরা হয়, আয়াত-২৮)
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম বুখারী (রহ:)বলেন, “ইবনে আব্বাস (রা:) বলেছেন, এ আয়াতে নির্দিষ্ট দিনগুলো বলতে কুরবানির দিন ও তার পরবর্তী তিন দিন।”
কুরবানির দিন সম্পর্কে রাসূল (স:) বলেছেন,” আইয়ামে তাশরিকের প্রতিদিন কুরবানি করা যায়।”
কেমন হতে হবে কুরবানির পশু?
কুরবানি শুদ্ধ হওয়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে কুরবানির পশু সঠিক হওয়া। কুরবানির জন্য নির্ধারিত ছয় ধরনের পশু।আর এগুলো হলো-উট,ভেড়া,ছাগল,দুম্বা গরু, মহিষ। আল্লাহ তায়ালা কুরবানির পশু সম্পর্কে বলেছেন,”আমি প্রতিটি সম্প্রদায়ের জন্য কুরবানির নিয়ম করে দিয়েছি। তাদেরকে গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু হতে যে রিজিক দেয়া হয়েছে সেগুলোর উপর তারা যেন আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। কারণ, তোমাদের উপাস্য একমাত্র উপাস্য, কাজেই তাঁর কাছেই আত্মসমর্পণ কর আর সুসংবাদ দাও বিনীতদেরকে।”(সূরা হজ,আয়াত-৩৪)
আর গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু হলো: উট, ভেড়া, ছাগল, দুম্বা গরু মহিষ।
কোরবানির পশু দোষ ত্রুটিমুক্ত হতে হবে। পশুর যে-সব দুর্বলতার কারণে কোরবানি দেওয়া যাবে না সেগুলো হলো—
-অন্ধ, বধির, অত্যন্ত দুর্বল ও জীর্ণ-শীর্ণ, জবাইয়ের স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে অক্ষম, লেজের বেশির ভাগ অংশ কাটা, জন্মগতভাবে কান না থাকা, কানের বেশির ভাগ কাটা, গোড়াসহ শিং উপড়ে যাওয়া,পাগল হওয়ার কারণে ঘাস-পানি ঠিকমতো না খাওয়া, বেশির ভাগ দাঁত না থাকা।
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘‘চার ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি জায়েজ হবে না। অন্ধ—যেটার অন্ধত্ব স্পষ্ট, রোগাক্রান্ত—যার রোগ স্পষ্ট, পঙ্গু—যার পঙ্গুত্ব স্পষ্ট এবং আহত—যার কোনো অঙ্গ ভেঙে গেছে।’’ (ইবনে মাজাহ: ৩১৪৪)
কুরবানির পশুর বয়স
কুরবানির পশুর বয়স শরিয়ত নির্ধারণ করে দিয়েছে।আর তা হলো – উটের বয়স পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়া,গরু ও মহিষের বয়স দুই বছর পূর্ণ হওয়া, ছাগল,ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে এক বছর পূর্ণ হতে হবে।
কয় ভাগে কুরবানি?
সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে কেউ একা কুরবানি দেয় আবার কেউ ভাগে তথা শরিকে কুরবানি করে।তবে ইসলামি শরীয়তে শরিকে কুবানির ক্ষেত্রে কিছু বিধান রয়েছে। আর তা হলো – গরু,মহিষ এবং উটের ক্ষেত্রে সাত ভাগ পর্যন্ত কুরবানি দেওয়ার অনুমোদন আছে। অন্য প্রাণীগুলো তথা ছাগল,ভেড়া,দুম্বা শরিকে কুরবানি দোয়ার বিধান নেই। শরিকে কুরবানি প্রসঙ্গে রাসূল (স:) এর হাদিস, “মুহাম্মাদ ইবনু হাতিম (র:) ….. আবূ যুবায়র (র:) থেকে বর্ণিত। তিনি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রা:) কে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিদায় হাজ্জর সম্পর্কে আলোচনা করতে শুনেছেন। তিনি (জাবির (রা:) বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইহরাম খোলার সময় কয়েকজন শারীক হয়ে এক-একটি পশু কুরবানির নির্দেশ দেন। এটা সে সময়ের কথা যখন তিনি তাদেরকে (উমরাহ আদায়ের পর) হজের ইহরাম ভঙ্গ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।” (সহিহ মুসলিম ১৩১৮)
ভাগে কুরবানি প্রসঙ্গে ইমামদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। যেমন-
ইমাম আবু হানিফার মতে ভাগে তথা শরিকে কুরবানি বৈধ তবে শর্ত হচ্ছে শরিকে অংশগ্রহণ করা প্রত্যেকের নিয়ত হতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন।
ইমাম শাফেয়ীর মতে ভাগে কুরবানি জায়েজ হোক তা মুস্তাহাব কিংবা ওয়াজিব।
উপরের হাদিসই তার দলিল।
মালেকীদের মতে সাধারণভাগে ভাগে কুরবানি দেওয়া বৈধ নয়।কিন্তু এ কথা সহিহ হাদিসের বিপরীত, সুতরাং তা গ্রহণযোগ্য নয়।
কুরবানির পশু জবাইয়ের পদ্ধতি
নিজের কোরবানির পশু নিজ হাতে জবাই করা মুস্তাহাব। যদি নিজে জবাই করতে না পারে তবে অন্যের দ্বারা জবাই করাবে। এ অবস্থায় নিজে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা উত্তম।
জবাই করার সময় কোরবানির পশু কিবলামুখী করে শোয়াবে। অতঃপর পাঠ করবে-
اَللَّهُمَّ إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ عَلَى مِلَّةِ اِبْرَاهِيْمَ حَنِيفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ – إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ – لَا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَٰلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ – بِسْمِ اللهِ اَللهُ
اِكِبَر – اَللَّهُمَّ مِنْكَ وَ لَكَ-
অতঃপর ‘বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার’ বলে জবাই করবে। ইচ্ছাকৃত বিসমিল্লাহ পরিত্যাগ করলে জবাইকৃত পশু হারাম বলে গণ্য হবে। আর যদি ভুলক্রমে বিসমিল্লাহ ছেড়ে দেয় তবে তা খাওয়া জায়েজ আছে।পশু জবাই করার সময় মুখে নিয়ত করা জরুরি নয়। অবশ্য মনে মনে নিয়ত করবে যে আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানি করছি। তবে মুখে দোয়া পড়া উত্তম।
জবাই করার সময় চারটি রগ কাটা জরুরি : ১. কণ্ঠনালি, ২. খাদ্যনালি, ৩-৪. দুই পাশের মোটা দুটি রগ, যাকে ওয়াজদান বলা হয়। এই চারটি রগের মধ্যে যেকোনো তিনটি যদি কাটা হয় তাহলে কোরবানি শুদ্ধ হবে। কিন্তু যদি দুটি কাটা হয় তবে কোরবানি শুদ্ধ হবে না।
মহান আল্লাহর প্রতি বান্দার পক্ষ থেকে ত্যাগ ও ভালোবাসার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো কুরবানি।কুরবানি করা প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের উপর ওয়াজিব। পবিত্র কুরআন ও হাদিসে কুরবানি করার সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে।প্রতিটি মানুষের উচিত কুরআন ও হাদিসে প্রদত্ত বিধান অনুযায়ী কুরবানি দেওয়া।
লেখক
নাজ-ই-নূর আনিছাহ্ , বাংলা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়