বিডিটাইম ডেস্ক
রোজার ঈদের পর কুষ্টিয়া শহরের কালিশংকরপুর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় গা ঢাকা দিয়েছিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ। আজ মঙ্গলবার (২৭ মে) ভোরে যৌথবাহিনীর একটি টিম অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। অভিযানে বাড়িটির নিচতলা ঘিরে ফেলা হয় এবং সেখান থেকেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা গেছে, তারা তিন রুমের নিচতলাটি ভাড়া নিয়েছিলেন। বাড়ির মালিক মীর মহিউদ্দিন, যিনি এক সময় চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র ছিলেন এবং বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তিনি কয়েক মাস আগে মারা যান। বাড়ির দোতলা ও তিনতলায় ছাত্ররা মেস করে বসবাস করতেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল আলম জানান, ‘পাশের একটি বাড়িতে থাকা কয়েকজন ব্যবসায়ী মালামাল রাখার কথা বলে ওই নিচতলার রুমগুলো ভাড়া নেন। পরে তারা জানান, তাদের দুজন গেস্ট সেখানে থাকবেন।’
অভিযানের সময় ভোরে নামাজে যাওয়ার পথে রবিউল দেখেন, পুরো এলাকা সেনাবাহিনী ঘিরে রেখেছে। কয়েক ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়ে একটি কালো মাইক্রোবাসে করে চারজনকে নিয়ে যাওয়া হয়। এদের মধ্যে একজনের হাতে হ্যান্ডকাপ ও আরেকজনের হাতে দড়ি বাঁধা ছিল।
মেসের এক শিক্ষার্থী জানান, পাশের বাসার এক ব্যক্তি ব্যবসার অজুহাতে রুমটি ভাড়া নিয়েছিলেন এবং তাঁর ‘গেস্ট’ হিসেবে সুব্রত ও মাসুদ সেখানে উঠেন। ঘটনার পর সেই ব্যক্তি, হেলাল উদ্দিন, পলাতক রয়েছেন। তার বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।
মেসের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা নিচতলার বাসিন্দাদের চেনার সুযোগ পাননি। সুব্রত বাইন দুই মাস তাদের সঙ্গে থাকলেও কেউ তা বুঝতে পারেনি। তবে মোল্লা মাসুদ নিয়মিত বাইরে যেতেন এবং পাশের বাড়ি থেকে খাবার আনতেন, কিন্তু কারো সঙ্গে কথা বলতেন না।
সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির গেটে তালা ঝুলছে। শিক্ষার্থীরা কাউকে ভিতরে ঢুকতে দিচ্ছেন না। পরিচয় দেওয়ার পর তারা জানান, তারা নিজেরাই ভাড়া তুলে মালিকপক্ষের লোকদের বুঝিয়ে দেন। নিচতলায় নতুন ভাড়াটিয়া এসেছিলেন কয়েক মাস আগে।
তল্লাশির পর দেখা যায়, নিচতলার একটি রুমের দরজা খোলা, ভেতরে ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় কিছু ব্যবহৃত জিনিসপত্র পড়ে আছে।
এই অভিযানে সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদের মতো কুখ্যাত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করায় শহরে স্বস্তি ফিরে এসেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা দীর্ঘদিন ধরেই তাদের গতিবিধি নজরে রেখেছিলেন।