বিডিটাইম ডেস্ক
গাজীপুরে দু’টি পৃথক হত্যা মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। আদালতের নির্দেশে গত ৩০ মে এই মামলাগুলো গ্রহণ করেছে পুলিশ। নিহত দুই ব্যক্তির পরিবার পৃথকভাবে মামলাগুলো দায়ের করেন।
মামলার প্রথমটি করেছেন নিহত তৈরি পোশাক শ্রমিক মো. মাহফুজের ভাই আপেল মাহমুদ। মাহফুজ গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত ছিলেন। ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট বিকেলে কাজ শেষে তিনি সফিপুর আনসার একাডেমির ৩ নম্বর গেটের সামনে ছাত্র-জনতার একটি মিছিলে যোগ দেন। সেখানে পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন বলে পরিবারের দাবি।
এ মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, কালিয়াকৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সরকার মোশারফ হোসেন এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর আলীসহ মোট ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মাহফুজের বাড়ি বগুড়া সদর থানার কুটুরবাড়ী মধ্যপাড়া এলাকায়। তিনি ইন্টার সফট লিমিটেড নামের একটি কারখানার শ্রমিক ছিলেন।
দ্বিতীয় মামলাটি করেছেন নিহত নিরাপত্তা কর্মী রোস্তম মিয়ার স্ত্রী শেফালী বেগম। তিনি গাজীপুর আদালতের নির্দেশে মামলাটি দায়ের করেন। রোস্তম নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলার নারাচাতল গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। একইদিনে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি নিহত হন বলে অভিযোগ।
এই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে আ ক ম মোজাম্মেল হককে। এছাড়া অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, কালিয়াকৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুরাদ কবির, মৌচাক ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সেলিম আজাদ এবং সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন। এ মামলায় ৩১৬ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অনেককে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে দেখানো হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালিয়াকৈর থানার এসআই ফজলুল হক বলেন, “আদালতের নির্দেশে দুটি মামলা নেওয়া হয়েছে। আমরা তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছি। তদন্ত শেষ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, গত জুলাই-অগাস্টে পোশাক শ্রমিকদের দাবিদাওয়া ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে একাধিক বিক্ষোভ ও সহিংস ঘটনার সূত্র ধরে এসব মামলার সূত্রপাত ঘটে। নিহতদের পরিবার বিচার দাবি করছে, তবে মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের নাম থাকায় বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে।