বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি:
জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার বগারচর ইউনিয়নে দুর্নীতির অভিযোগে সাময়িকভাবে বদলিকৃত ভূমি কর্মকর্তা সাজ্জাত হোসেনকে বদলির মাত্র পাঁচ দিন পর পুনর্বহাল করা হয়েছে। তার পুনর্বহালকে ঘিরে এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক।
সূত্র জানায়, ঘুষ বাণিজ্য ও সেবাগ্রহীতাদের হয়রানির অভিযোগে গত ৮ এপ্রিল সাজ্জাত হোসেনকে দেওয়ানগঞ্জে বদলি করা হয়। তার স্থলাভিষিক্ত হয়ে ১০ এপ্রিল বগারচরে দায়িত্ব নেন রশিদপুর ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ৫ দিন পরই সাজ্জাত হোসেনের বদলি আদেশ স্থগিত করে তাকে পূর্বের পদে পুনর্বহাল করা হয়।
১৩ এপ্রিল (রোববার) পুনর্বহাল হয়ে বগারচর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগ দেন সাজ্জাত হোসেন। এর পর থেকেই এলাকায় শুরু হয় মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ, পুনর্বহালের পর সেদিনই অফিসে আসা ঘুষ প্রদানকারীদের কৌশলে টাকা ফেরত দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা করেন সাজ্জাত। এমনকি তার প্রতিনিধি পাঠিয়ে কয়েকজন সেবাগ্রহীতার বাড়িতে গিয়েও টাকা ফেরত দেওয়া হয় বলে স্থানীয়ভাবে গুঞ্জন রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, ভুক্তভোগীদের মুখ বন্ধ রাখতে তিনি রাজনৈতিক কর্মীদের দিয়ে হুমকি পর্যন্ত দিচ্ছেন। স্থানীয়রা জানান, বগারচরে যোগদানের পর থেকেই ‘রামরাজত্ব’ চালিয়েছেন সাজ্জাত হোসেন। নামজারি বাবদ ৪ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ আদায় করতেন তিনি। অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েও সেবা না দিয়ে হয়রানি করেছেন বলেও অভিযোগ।
ভূমি কর্মকর্তার এমন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কথোপকথনের ভিডিওর পর ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। তবে এত কিছুর পরও কীভাবে তাকে পুনর্বহাল করা হলো তা নিয়ে জনমনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বকশীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসমা উল হুসনা জানান, “তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলছে। সে কারণেই তাকে আবার অত্র ইউনিয়নে বহাল রাখা হয়েছে।”
এখন স্থানীয়দের প্রশ্ন—এটি পুনর্বহাল, নাকি দুর্নীতির অভিযোগ থেকে দায়মুক্তি দিতে একটি ‘পুনর্বাসন’? এলাকাবাসীর দাবি, শুধু সাজ্জাত হোসেন নন, তার অপকর্মের পেছনে যারা ছায়া দিয়ে যাচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।