Top 5 This Week

তিন মাসে ২৫ সাইকেল চুরি রাবিতে; নিরাপত্তার শঙ্কা শিক্ষার্থীদের

Spread the love

রাহাত আল খালেদ, রাবি

গত তিন মাসে পঁচিশটি সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। এতে নিরাপত্তার শঙ্কা দেখা দিয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চুরি হয়ে যাওয়া সাইকেল গুলোর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ৪ টি, ড.মুহাম্মাদ শহিদুল্লাহ একাডেমিক ভবন থেকে ৩ টি, কাজলা গেইট সংলগ্ন মসজিদের সামনে থেকে ৩ টি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবন থেকে ৩ টি, মতিহার  হল থেকে ২ টি , সোহরাওয়ার্দী  হল থেকে ২ টি , মাদার বখশ হল থেকে ১ টি , শাহ মাখদুম হল থেকে ২ টি, কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে ১, শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ সিনেট ভবনের সামনে থেকে ১ টি, বঙ্গবন্ধু হলের সামনে থেকে ১ টি, মমতাজ উদ্দিন আহমেদ একাডেমিক ভবন থেকে ২ টি সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, সাইকেল চুরি হওয়ার ফলে বিপাকে পড়তে হয়েছে তাদের। অনেক শিক্ষার্থী সাইকেল নিয়ে টিউশনি, ক্লাস কিংবা অন্যান্য কাজগুলোতে ব্যবহার করেন। তবে চুরি হয়ে যাওয়া সাইকেলগুলো ফেরত না পাওয়ায় প্রশাসনের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তারা। ক্ষোভও প্রকাশ করছেন অনেকেই।

যোগাযোগের একমাত্র বাহনটি হারিয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতার বিভাগের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আল-আমিন বলেন, ক্যাম্পাসের সাইকেল চুরির মূল কারণ প্রশাসনের গাফিলতি ও বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ। গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সিসিটিভি নেই বা সিসিটিভি থাকলেও বেশিরভাগই অচল বা হার্ডডিস্ক নষ্ট। গ্যারেজের সংখ্যা কম এবং গ্যারেজে থাকে না পর্যাপ্ত টোকেন। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।বহিরাগতদের ক্লাস পিরিয়ডে প্রবেশ নিষিদ্ধ, সিসিটিভি স্থাপন ও গ্যারেজ-টোকেন ব্যবস্থা উন্নত করা জরুরি।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির বিভাগের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আরমানুল ইসলাম বলেন, ক্যাম্পাসে সাইকেল চুরি,ছিনতাই প্রভৃতি অপরাধ বৃদ্ধির মূল কারণ বহিরাগতদের অবাধ বিচরণ ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাব। প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে পরিস্থিতি আরও অবনতি হচ্ছে। প্রতিটি হল, একাডেমিক ভবন, কাজলা ও সেন্ট্রাল মসজিদে সার্বক্ষণিক সিসিটিভি স্থাপন এবং গেটগুলোতে কড়া চেকিং ব্যবস্থা চালু করা জরুরি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ৫ আগস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। পুলিশ ও প্রশাসনের কার্যকারিতা কমে যাওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে গার্ড ও নিরাপত্তা কর্মীর সংকটের কারণে গেট, একাডেমিক ভবন ও হলে যে সাইকেল গেরেজ আছে তা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া, ওই সময়ে সিসিটিভি ক্যামেরাসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা সরঞ্জাম ভাঙচুর হওয়ায় নজরদারি ব্যবস্থা আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে।

বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে আসা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এমন এক ভৌগোলিক অবস্থানে অবস্থিত, যেখানে বহিরাগতদের চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করা অত্যন্ত কঠিন। পার্শ্ববর্তী যে গ্রামগুলো রয়েছে অধিকাংশ গ্রামের বাসিন্দাদের আসা যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর দিয়ে, পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলিও ক্যাম্পাসের মধ্য দিয়ে গেছে। এমন পর্যায়ে বহিরাগত বন্ধ করা খুবই কঠিন এতে করে স্থানীয়দের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কেও বিরূপ প্রভাব পরতে পারে। তবে, ক্যাম্পাসে অপ্রয়োজনীয় ঘুরাঘুরি রোধে আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এবং নিয়মিত এ বিষয়ে আলোচনা করছি।

ভুক্তভোগীদের সাহায্য করার বিষয় জানতে চাইলে তিনি জানান, ভুক্তভোগীদের প্রশাসনিকভাবে যতটুকু সম্ভব সহায়তা করছি এবং তাদেরকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দিচ্ছি, যাতে পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারে। এর মাধ্যমে কিছু চুরি হওয়া সাইকেল উদ্ধার করা গেলেও, মোট চুরির সংখ্যার তুলনায় তা এখনও অনেক কম। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো পুনরায় স্থাপন করা হচ্ছে এবং নিরাপত্তাকর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদেরও নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish