কুবি প্রতিনিধি
উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের মাধ্যমে নতুন প্রশাসন পেয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী, প্রথম বারের মতো নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপ-উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল এবং কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান।
রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের আদেশক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. শাহিনুর ইসলামের সাক্ষরিত আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিষয়টি জানা যায়।
নিয়োগের শর্তে বলা হয়, উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগের মেয়াদ যোগদানের তারিখ হতে ০৪ (চার) বছর হবে। পদে থাকাকালীন তাদের বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতন ভাতাদি পাবেন। বিধি অনুযায়ী ভাইস চ্যান্সেলর, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ও ট্রেজেরার পদের সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি যেকোনো প্রয়োজনে যে কোনো সময় এসব নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. হায়দার আলী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এপ্লাইড ফিজিক্স এন্ড ইলেক্ট্রনিকসে অনার্স এবং মাস্টার্স এবং জাপানের তায়োহাশি ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি থেকে ইলেক্ট্রনিকস এন্ড ইনফরমেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
উপ-উপাচার্য ও লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে বিএসএস, এমএসএস এবং পিএইচডি ডিগ্রি এবং ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল ডিগ্রি লাভ করেন।
অধ্যাপক মাসুদা কামাল প্রশাসনিক বিভিন্ন পদে প্রায় ১৭ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে, যার মধ্যে বিভাগের চেয়ারম্যান হিসাবে প্রায় ১২ বছর, ভর্তি পরীক্ষার কমিটির আহ্বায়ক, নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলের প্রভোস্ট ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
তিনি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনার এবং সম্মেলন এবং নেটওয়ার্কিং আয়োজন ও পরিচালনায় অভিজ্ঞতা রয়েছে। এছাড়া, দেশি বিদেশি বিভিন্ন জার্নালে তার প্রকাশিত গবেষণা ও বই রয়েছেন।
কোষাধ্যক্ষ ও মার্কটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলাইমান তিনি ২০০৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ (সম্মান) সহ স্নাতক হন এবং ২০০৫ সালে এমবিএ অর্জন করেন। এছাড়া, তিনি ২০১৭ সালে ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া পার্লিস (UNIMAP) থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। গবেষণায় তার বেশ সুনাম রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে, অধ্যাপক সোলাইমানের ২৫টিরও বেশি গবেষণা নিবন্ধ স্থানীয় এবং স্কোপাস লিস্টেড আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি এর আগে ১১ বছরেরও বেশি প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বিভাগের চেয়ারম্যান, নিজ বিভাগের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর, এমবিএ ইভিনিং প্রোগ্রাম, ছাত্র উপদেষ্টা, নিজ বিভাগের OBE (উদ্দেশ্য ভিত্তিক শিক্ষা) কারিকুলামের চেয়ারম্যান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর, এবং নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী আবাসিক হলে হাউস টিউটর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
প্রসঙ্গত, ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর দেশজুড়ে শুরু হয় পদত্যাগের হিড়িক। সরকার পতনের পর পদত্যাগ করেন হাসিনা সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ উপাচার্য পদত্যাগ করেন। আর কোষাধ্যক্ষের মেয়াদ শেষ হওয়ার এই পদ আগে থেকে শূন্য ছিল।