কুবি প্রতিনিধি
লাল মাটির ক্যাম্পাস খ্যাত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ২০২৩-২৪ সেশনের নবীন শিক্ষার্থীদের উৎসবমুখর আগমনে যোগ হয়েছে নতুন একটি ব্যাচ।
রোববার (২৭ অক্টোবর ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮তম ব্যাচের প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগগুলো আলাদা আলাদা নবীনবরণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেয়। প্রতিটি বিভাগের করিডোর, ক্লাসরুম ফুল-বেলুনে সাজানো হয়। বিভাগের এমন আয়োজনে আনন্দিত নবীন শিক্ষার্থীরা।
ওরিয়েন্টেশন ক্লাসে শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতিমূলক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সব নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলার জন্য নবীনদের প্রতি আহবান জানান। প্রবীণরাও নবীনদের সঙ্গে পরিচিত হয় এবং বিতরণ করে রজনীগন্ধা ও লাল গোলাপ। বরণ শেষে নবীনরা একে অপরের সাথে মেতে উঠে গ্রুপ সেলফি তোলায়। অনেকে আবার বসে পড়ে আনন্দ আড্ডায়।
আইন বিভাগের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান ইতি বলেন, “বড়ভাই আপুদের উষ্ণ অভ্যর্থনায় আমরা নবীন কুবিয়ানরা সিক্ত! আইন বিভাগের আজকের আয়োজন সত্যিই অনবদ্য ছিল। আজ আমি সত্যিই ভীষণ আনন্দিত এবং গর্বিত লালমাটির ক্যাম্পাস খ্যাত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল পরিবারের একজন অংশ হতে পেরে।
আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয় একজন শিক্ষার্থীকে মহিমান্বিত করে না বরং একজন শিক্ষার্থীই তার সৎ কর্ম দিয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে মহিমান্বিত করে। আমি বিশ্বাস রাখি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্য ও সংস্কৃতির উর্বর মাটিতে আমরা প্রতিটি নবীনই নতুন নতুন স্বপ্নের বীজ বপন করব এবং একদিন সেই বীজ পূর্ণাঙ্গ বৃক্ষে রূপ নেবে।
একজন নবীন হিসেবে আমি এও প্রত্যাশা করি, আমাদের সমষ্টিগত প্রচেষ্টায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা একদিন ইতিহাস, ঐতিহ্য শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে বাংলাদেশের শীর্ষতম বিশ্ববিদ্যালয়ের একটিতে পরিণত করতে সক্ষম হবো এবং আমরা হবো ভবিষ্যতের সেই উচ্ছ্বসিত ইতিহাসের গর্বিত অংশ।
নৃবিজ্ঞান বিভাগে ১৮ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান বলেন, প্রথমত একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় একটি সিট অর্জন করতে পেরে আমি আনন্দে উদ্বেলিত। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিন হিসেবে দিনটি আমার কাছে খুবই স্পেশাল। একটি নতুন জীবনে আমি পর্দাপণ করলাম। আমার বিভাগের অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে আমার সিনিয়রদের বন্ধুত্বসুলভ আচরণ ও দিকনির্দেশনা পেয়ে আমি যথেষ্ট সন্তুষ্ট। তন্মধ্যে আরেকটি কথা হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রক্রিয়া যদি অনলাইন ভিত্তিক হতো, তখন শিক্ষার্থীদের কষ্ট অনেকাংশে কমে যেতো।
অর্থনীতি বিভাগের ১৮ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী সাবিকুন্নাহার লাকী বলেছেন, কলেজ পাশ করার পর প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া। আলহামদুলিল্লাহ, আমি এখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র ভাই এবং আপুরা আমাদেরকে সাদরে বরণ করে নিয়েছেন এবং কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন যা আমাদের ভবিষ্যত জীবন গঠনে অনেক সহায়ক হবে। উনারা অনেক ফ্রেন্ডলি এবং সাপোর্টিভ ছিলেন। কুবি’তে আমাকে সবচেয়ে বেশি যেটা আকর্ষণ করে তা হচ্ছে প্রাকৃতিক এই সৌন্দর্য্য। চারিদিকে সবুজের সমারোহ, লালমাটির ক্যাম্পাস এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম দিন সবকিছু মিলিয়ে আজকের দিনটা আমার কাছে খুবই স্পেশাল।
আরও বলেন, এতোদিন ছিলাম স্কুল-কলেজে একটা অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় একজন শিক্ষার্থীকে গ্লোবাল পারসন ও পরিণত করে। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে নিজেকে বিকশিত করার জায়গা। আশাকরি, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আমার সেই প্রত্যাশা পূরণ করবে।