যবিপ্রবি প্রতিনিধি
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)-তে শেখ পরিবারের নামে থাকা বিভিন্ন ভবনের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বসানো হচ্ছে নতুন নামফলক। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৫তম রিজেন্ট বোর্ড সভায় এসব ভবনের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
শনিবার (৩১ মে) ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাডেমিক ভবন’-এর পরিবর্তে ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম একাডেমিক ভবন’ নামফলক স্থাপনের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এর পাশাপাশি, শেখ হাসিনা ছাত্রী হল এর নাম পরিবর্তন করে তাপসী রাবেয়া হল,
শেখ রাসেল জিমনেসিয়াম এর নাম পরিবর্তন করে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান জিমনেসিয়াম,
ঝিনাইদহে অবস্থিত ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ছাত্র হল এর নাম পরিবর্তন করে কবি গোলাম মোস্তফা হল,
এবং ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ এর নাম পরিবর্তন করে ইনস্টিটিউট ফর হায়ার স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ রাখা হলেও, এসব স্থাপনায় এখনো নামফলক বসানো হয়নি।
এ বিষয়ে একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াজ শেখ বলেন, “নামফলক বসানো শুরু হয়েছে, এটা নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ। তবে এত দেরিতে কেন নামফলক বসানো হলো, সেটাও ভাবনার বিষয়।
জাতীয় কবির নামে ভবনের নামকরণ হওয়া সত্ত্বেও এতদিন ফলক না থাকা সাংস্কৃতিক চেতনার প্রতি এক ধরনের অবহেলার প্রতিফলন। স্বৈরাচার তো বহু আগেই বিদায় নিয়েছে, তবুও এই বিলম্ব প্রমাণ করে এখনও অনেক জায়গায় অন্ধকার রয়ে গেছে।
এখন যখন ফলক বসানো হয়েছে, আশা করি এটি কেবল আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যবোধ ও সাংস্কৃতিক চেতনার প্রতিফলন ঘটাবে।”
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে যবিপ্রবিতে ‘জুলাই বিপ্লব’ নামে পরিচিত এক ছাত্র আন্দোলনের সূচনা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অব্যবস্থা, স্বৈরশাসনের প্রতিবাদ এবং শিক্ষার পরিবেশ রক্ষার দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে।
আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি ছিল শেখ পরিবারের নামে থাকা একাডেমিক ভবন, হল এবং অন্যান্য স্থাপনার নাম পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় সংস্কৃতি ও ইতিহাসের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের নামে নামকরণ।
টানা আন্দোলনের ফলে প্রশাসন রিজেন্ট বোর্ডের ১০৫তম সভায় এসব দাবি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়। ভবনগুলোর নতুন নামকরণ সেই সিদ্ধান্তেরই বাস্তব রূপ।