কুবি প্রতিনিধি:
প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ছাড়াই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট পদের জন্য এক শিক্ষিকা প্রস্তাব করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মুজিবুর রহমান। তবে প্রস্তাবে রাজি হওয়ার পর ঐ পদে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অন্য আরেক শিক্ষিকাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে৷ ফলে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওই শিক্ষিকা।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কামরুন নাহার (শীলা) কে এই প্রস্তাব দেন তিনি। তবে সেই পদে ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক ড. মোছা. শাহিনুর বেগম কে হল প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের এমন ঘটনায় ড. কামরুন নাহার ‘অপমানিত’ হয়েছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন৷
তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, কামরুন নাহারকে প্রভোস্ট করার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাকসুদা কামাল বলেন, আমি রেজিস্ট্রারকে এমন কিছু বলিনি। যদি তিনি এমন প্রস্তাব দিয়ে থাকেন তাহলে বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রশাসনের সাথে কথা বলব।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ড. কামরুন নাহার জানান, পূজার বন্ধের আগের দিন রেজিস্ট্রার মুজিবুর রহমান আমাকে হল প্রভোস্ট হওয়ার প্রস্তাব দেন। পরে সহকর্মীদের কথায় প্রভাবিত হয়ে ঐ পদের জন্য রাজি হয়ে যান আমি। পরে ঐ পদে দেখি অন্য একজন সহকর্মীকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাকে এভাবে অপমান না করলেও পারত। আমি কোনো পদের পেছনে ছুটিনি, ধর্ণা দিইনি। যথাসময়ে পদোন্নতির বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আমার গুরুতর চাওয়ার কিছু নাই৷ এছাড়াও জুলাই বিপ্লবে তার আহত ছেলেকে দেখতে যাওয়ার সমালোচনাও করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার মো. মুজিবুর রহমান বলেন, আমি উনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্টের পদ দিলে নিবে কি না, তখন উনি আমার প্রস্তাব সরাসরি না করে দেয়। তবে এই বিষয়ে আমাকে প্রশাসন থেকে কিছু বলেনি।
প্রশাসনিক পদের বিষয়ে উপাচার্যের মতামত ও নির্দেশনা ছাড়া আপনি কাউকে এমন প্রস্তাব দিতে পারেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ব্যক্তিগত জায়গা থেকে উনার মতামত জানতে চেয়েছি। সহানুভূতির জায়গা থেকে জানতে চেয়েছিলাম।
তবে ভিন্ন কথা বলছেন ড. কামরুন নাহার। তিনি জানান, আমার সাথে তো উনার কোনো সখ্যতা নেই। তাহলে তিনি কোন ক্ষমতাবলে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া আমাকে এই পদের প্রস্তাব করেন। উনি বলেছেন শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার জন্য আমাকে উপহার সরূপ এই পদ দিতে চায়। আমি তো পদ চাইনি, উল্টো আমাকে অপমান করা হলো।
তিনি আরও বলেন,রেজিস্ট্রার দূর্নীতির দায়ে পানিশমেন্ট পাওয়া একজন কর্মকর্তা। এখনো উনি এসব চর্চা করতে চাচ্ছেন। তার মানে কি উনাকে তেলায় পদ নেওয়া লাগবে আমার।
এদিকে অভ্যন্তরীণ অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৮ এর ২৭ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পদ থেকে অব্যাহতি পান মো. মুজিবুর রহমান। এসময় তাকে পদসহ লাইব্রেরিয়ান পদে বদলি করেন সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী। তবে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে অধ্যাপক ড. এএফএম. আবদুল মঈন পদত্যাগের পূর্বে ফের গত ১১ আগস্ট তাকে রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগ দিয়ে যান তিনি।