বিডিটাইম ডেস্ক
ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘ফাত্তাহ’ ছুড়েছে ইরান। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, এসব ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে ইসরায়েলের আকাশসীমা অতিক্রম করেছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের দাবি অনুযায়ী, এই হামলায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বেষ্টনী কার্যত ভেঙে পড়েছে।
ইরানের এই হামলার জবাবে ইসরায়েলও পাল্টা হামলা শুরু করেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) জানায়, তারা তেহরানসহ বিভিন্ন এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে। লক্ষ্যবস্তু ছিল সামরিক স্থাপনা এবং কৌশলগত কেন্দ্র।
ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, রাজধানী তেহরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। লাভিজান, কারাজ এবং তেহরানের পূর্ব-পশ্চিমাংশে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ধোঁয়ার কুণ্ডলী আকাশে উঠতে দেখা গেছে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) জানায়, ইসরায়েলি হামলায় তেহরান রিসার্চ সেন্টার এবং কারাজের টিইএসএ নামক সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব স্থাপনায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের জন্য ব্যবহৃত উপকরণ উৎপাদিত হতো, যা পারমাণবিক কর্মসূচির মূল উপাদান।
ইরানের ইমাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়েও হামলা চালানো হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামিক রেভ্যুলুশনারি গার্ড কোর (IRGC)-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে বিবেচিত।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যাকটিভিস্টস জানিয়েছে, ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলায় ইরানে এখন পর্যন্ত ৫৮৫ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১,৩২৬ জন। নিহতদের মধ্যে ২৩৯ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ১২৬ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।
তবে ইরান সরকারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, নিহতের সংখ্যা ২২৪ এবং আহত ১,২৭৭ জন। সোমবারের পর দেশটি হতাহতের নতুন কোনো সরকারি তথ্য প্রকাশ করেনি।
চলমান এই সংঘাত ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে টানা ছয় দিন ধরে চলছে। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, সংঘাত যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে তা গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। ইরানের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার সেই আশঙ্কাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।