বিডিটাইম ডেস্ক
ইরান আবারও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে সরাসরি হুঁশিয়ার করে বলেছে—তাদের পক্ষ থেকে যদি আরেকটি হামলা চালানো হয়, তাহলে তার জবাব হবে আগের চেয়ে আরও ভয়ংকর ও বিস্তৃত। বুধবার (২৫ জুন) রাতে এক বিবৃতিতে ইরানের শীর্ষ সামরিক ঘাঁটি ‘খাতামুল আম্বিয়া’র মুখপাত্র এ হুঁশিয়ারি দেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানের সশস্ত্র বাহিনী বর্তমানে ১০০ শতাংশ প্রস্তুত এবং যেকোনো যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশটির গোয়েন্দা ও সামরিক পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ সক্রিয় রয়েছে।
মুখপাত্র বলেন,“আমরা ওয়াশিংটন ও তেল আবিবকে সতর্ক করছি—ইরানের ভূখণ্ডে নতুন করে কোনো আগ্রাসন চালানো হলে তা অতীতের চেয়ে অনেক বেশি ভয়ংকর জবাবের মুখে পড়বে। আমাদের টার্গেটের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে আরও গভীর ও স্পর্শকাতর অঞ্চল।”
তিনি আরও বলেন, “ইসরায়েলি ড্রোন ইতোমধ্যে ইরানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে একাধিক স্থানে হামলা চালিয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক আইন এবং যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন। ইসরায়েল বরাবরের মতো মিথ্যা প্রচার ও উসকানির পথেই হাঁটছে।”
বিবৃতিতে নেতানিয়াহু ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ‘অপরাধী’ আখ্যা দিয়ে বলা হয় “এই দুই নেতা ভিত্তিহীন দাবির মাধ্যমে ইরানবিরোধী মিথ্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আর তাদের প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করি না।”
মুখপাত্র তার বিবৃতিতে কাতারে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটি **‘আল-উদেইদ’-এ** সাম্প্রতিক হামলার উল্লেখ করে বলেন, “এই হামলা ছিল সাহসী মুজাহিদিনদের একটি নমুনা জবাব। উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত দখলদারদের ওপর আঘাত চালানো হচ্ছে। যারা আবার আগ্রাসনের পথ বেছে নেবে, তারা এরচেয়েও ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হবে।”
যদিও সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এসেছে এবং বিমান চলাচলের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে, তবে ইরানের এই হুঁশিয়ারি নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুদ্ধ থামার ঘোষণা যতই দেওয়া হোক, বাস্তবতার ময়দানে উত্তেজনা এখনো বিদ্যমান।
বিবৃতির শেষে ইরান জানায়,“আমরা শান্তি চাই, কিন্তু আত্মসমর্পণ নয়। যদি কেউ আবার আগুন জ্বালাতে চায়, আমরা তা আগুন দিয়েই নিভাব।”
বিশ্লেষকদের মতে, তেহরানের এই বক্তব্য যুদ্ধবিরতির সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তুলছে। বিশ্ব সম্প্রদায় এখন নজর রাখছে — কথিত শান্তি দীর্ঘস্থায়ী হয় কিনা, নাকি এটি আরও বড় সংঘাতের আগাম সংকেত।