Top 5 This Week

ববি লোকপ্রশাসনের শিক্ষাসফর যেন এক স্মৃতির জলসাঘর

Spread the love

 

হৃদয় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষা সফর মনের প্রকৃতি প্রেমের সুপ্ত বাতিগুলোকে জাগ্রত ও শিক্ষার আলোকে বিকশিত করতে সাহায্য করে। সৃষ্টির রহস্য, মানুষ ও প্রকৃতির বিভিন্ন রূপ দর্শনের মাধ্যমে যেমন নিজেকে জানে, তেমনিভাবে বিশ্বজ্ঞান ও লাভ করে। শিক্ষা সফরের মাধ্যমে বিষয়গুলো সহজে আত্মস্থ হয়ে যায় এবং তা স্মৃতির পাতায় যুগের পর যুগ থেকে যায়।

এমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ স্মৃতি স্মৃতির পাতায় বন্দি করে রাখতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের নবম ব্যাচের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা শিক্ষা সফরে পা রাখেন সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার।

দীর্ঘ পথ লঞ্চ ও গাড়ি যোগে পৌঁছাতে হবে কক্সবাজারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে অটোতে করে পৌঁছালাম লঞ্চ ঘাট। আমাদেরকে এগিয়ে দিতে আসলেন আমাদের প্রিয় সিরাজিস সাদিক স্যার। আমাদের সাথে অভিভাবক হিসেবে ও আমাদের সফরকে প্রানোবন্ধ করতে আমাদের সাথে ছিলেন মিনহাজুল আবেদীন স্যার।লঞ্চ আসলো এবং রাত নয়টার দিকে ছেড়ে দিল। রাত তিনটার দিকে আমরা পৌঁছালাম চাঁদপুরে। চাঁদপুরে নেমে অটো করে পৌঁছালাম চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড।সেখান থেকে সৌদিয়া পরিবহনে শুরু হলো কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে যাত্রা যাত্রা।

বিকেল তিনটায় এসে পৌঁছালাম কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য কক্সবাজারে। খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিয়ে রাতের বিচে দীর্ঘসময় হাঁটাহাঁটি করে আবার পরেরদিন একদম সকালে চলে গেলাম বিচে। সকাল সকাল উত্তেজনাময় এক ফুটবল ম্যাচ । এরপর সকালের নাস্তা শেষ করে বিশ্রাম নিয়ে দুপুরের গোসল,সে কী বিশাল ঢেউ এর শো শো শব্দ সাথে বৃষ্টি আরো বাড়তি রোমাঞ্চ বাড়িয়ে দিল। এরপর দুপুরের খাবার খেয়ে বেড়িয়ে পরলাম মহেশখালীর উদ্দেশ্যে। আধিনাথ,স্বর্ণ মন্দির ঘুরে ফিরতি পথে কেউ কেউ কিছু কেনাকাটা করে সন্ধ্যার পরে মহেশখালী ত্যাগ করলাম।

এরপর রাতে শুরু হলো আমাদের মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লটারি। যারা ভাগ্যবান তারা পুরস্কার জিতলো কিন্তু শর্ত ছিল যেকোনো একটি পারফর্ম করে পুরস্কার নিতে হবে। একে একে সবাই পারফর্ম করলো। কেউ গান,কেউ কবিতা, কেউ উপন্যাস। সবাই সবার প্রতিভার জানান দিল।

খাওয়া শেষ করে মাঝরাতে বিচে হাঁটলাম পুরো পথ।রাত,সকাল,বিকেল একেক সময় একেক অনুভূতির সাক্ষী হলাম। পরের দিন দুপুরে রুম চেক আউট করে দুপুরের খাবার খেয়ে চান্দের গাড়িতে বেড়িয়ে পরলাম ইনানী ও পাটুয়ারটেক এর উদ্দেশ্য। ঘোরাঘুরি শেষে রাতের খাবার খেয়ে সবাই বেরিয়ে পরলো শপিং করতে। স্যার শপিং করতে সময় বেধে দিয়েছেন কারণ রাতেই বরিশাল এর উদ্দেশ্য রওনা দিতে হবে। স্মৃতির পাতায় প্রতিটি মুহূর্ত স্মৃতিময় করে রাখতে কেউ ফটোসেশন এ কমতি রাখলো না।

যাইহোক, মনকে বোঝাতে পারছি না ছেড়ে যেতে হচ্ছে হৃদয় জুড়ানো অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত জায়গাগুলো। এই তিন দিনেই মিশে গিয়েছি প্রকৃতির প্রাণে।

রাত ১২ টার পরে সেন্টমার্টিন বাসে করে ঢাকায় আসলাম। এরপর শ্যামলী বাসে করে পৌঁছে গেলাম বরিশালে। সামনে পূজার বন্ধ তাই কেউ কেউ ক্যাম্পাসে না ফিরে চলতি পথে বাড়ির পথে নেমে পরলো। ফিরতি পথে অনেকেই ছিল ক্লান্ত এবং কেউ কেউ ছিল পুরোটা সময় ধরে প্রাণবন্ত। সব মিলিয়ে জীবনের একটা সেরা মুহূর্ত স্মৃতির পাতায় যোগ হলো।

এভাবেই পরিসমাপ্তি হলো লোকপ্রশাসন বিভাগের নবম ব্যাচের স্মৃতিময় একটি শিক্ষা সফর। বৃদ্ধ বয়সে বা কর্মব্যস্ত জীবনে সোনালি অতীত হয়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শিক্ষা সফর। না গেলে হয়ত অনুভব করতে পারতাম না। শেষ বেলাতে অতীতের স্মৃতি যা হাজার বছর ধরে সংরক্ষিত হয়ে থাকবে স্মৃতির পাতায় এবং আমাদের এই সোনালি অধ্যায়গুলো।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish