Top 5 This Week

বুটেক্সের আবাসিক হলে সুপেয় পানির অভাব ও খাবারের মান নিয়ে অস্বস্তি

Spread the love

বুটেক্স  প্রতিনিধি

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) শহীদ আজিজ হলে দীর্ঘদিন ধরে সুপেয় পানির সংকট এবং ডাইনিং সেবার মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনের পানি সংকট এবং ডাইনিংয়ে নিম্নমানের খাবারের কারণে ভোগান্তিতে পড়ছেন। বিভিন্ন সময় কর্তৃপক্ষকে এসব সমস্যা সমাধানের জন্য জানানো হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

চারতলা বিশিষ্ট হলটিতে প্রায় ৪০০জন শিক্ষার্থী বসবাস করে, সে তুলনায় সুপেয় পানির জন্য ফিল্টার রয়েছে মাত্র তিনটি। এর মধ্যে শুধুমাত্র নিচতলায় রয়েছে দুটি ফিল্টার যার একটি নরমাল পানির জন্য অপরটি ঠান্ডা পানির জন্য এবং ৩য় তলায় রয়েছে শুধুমাত্র একটি কুলিং ফিল্টার, নেই নরমাল পানির কোনো ব্যবস্থা। বরং গ্রীষ্মের সময় এই কুলিং ফিল্টারগুলোতেও শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণে পানি থাকে না। তাছাড়া কুলিং ফিল্টার একটিই হওয়ায় গ্রীষ্মকালে তীব্র গরমে শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ঠাণ্ডা পানি সরবরাহ সম্ভব হয় না। হলের শিক্ষার্থীদের প্রত্যেককে নিচ তলায় অবস্থিত একটি ফিল্টার থেকে পানি সংগ্রহ করতে হয়, যা বিশেষ করে উচ্চতলা থেকে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই অস্বস্তিকর।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ তম ব্যাচের এপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী দাহির মাহমুদ জানান, আমরা যারা উপরের তলায় থাকি আমাদের প্রতিদিন পানির জন্য নিচতলায় আসতে হয়। অনেক সময় ক্লান্ত থাকার কারণে নিচ তলায় নামা আবার উঠার আগ্রহ থাকে না। যার কারণে মাঝে মাঝে পর্যাপ্ত পানি পান না করেই থাকতে হয়। গরমকালে কুলিং ফিল্টার থেকে পর্যাপ্ত ঠাণ্ডা পানি পাওয়া যায় না, তাই আমাদের ঠাণ্ডা পানির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। আবার অনেক সময় পানি বেশি ঠান্ডা থাকে,  যা নিয়মিত পান করলে সর্দি-ঠান্ডা লেগে যায়। তাই ঠান্ডা পানির পাশাপাশি প্রত্যেক ফ্লোরে নরমাল পানিও রাখা উচিত বলে আমি মনে করি।

এ বিষয়ে হল কর্তৃপক্ষের নিকট জানতে চাইলে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক এমদাদ সরকার বলেন, আমরা এ বিষয়ে অবগত আছি। আগে শুধুমাত্র নিচতলায় কুলিং ফিল্টার ছিলো,কিছুদিন আগে আমরা ৩য় তলায় নতুন আরেকটি স্থাপন করেছি। টেকনিশিয়ানদের সাথে যোগাযোগ করা হইছে নিচতলার ফিল্টারটা আরো প্রসারিত করার জন্য। এছাড়াও পর্যায়ক্রমে ২য় ও ৪র্থ তলায় গ্রীষ্মের আগেই নতুন ফিল্টার স্থাপনের ব্যবস্থা করা হবে ইনশাআল্লাহ।

এছাড়াও শহীদ আজিজ হলের শিক্ষার্থীদের আরেকটি প্রধান সমস্যা হল ডাইনিংয়ের খাবারের মান। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, খাবারের মূল্যের তুলনায় ডাইনিংয়ে পরিবেশিত খাবার নিম্নমানের এবং অস্বাস্থ্যকর। খাবারের মান এতটাই নিম্ন যে প্রায়ই তা খাওয়ার উপযোগী থাকে না।

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আনিসুর রহমান বলেন, প্রতিদিন ডাইনিংয়ে যে খাবার দেওয়া হয় তা প্রায়ই অস্বাস্থ্যকর। কখনও ভাতের চাল পর্যাপ্ত সিদ্ধ হয়না, কখনও অতিরিক্ত তেল মসলা ব্যবহার করা হয়, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়াও প্রতিবেলার খাবার মূল্য হিসেবে ৫০টাকা নেওয়া হয় সেই তুলনায় খাবারের মান অনুন্নত এবং খাবার মূল্য কিছুটা কমালে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবো।

খাবারের মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের কথা জানানো হলে ডাইনিং ম্যানেজার মোঃ উজ্জ্বল বলেন, দুপুরে আমাদের ডাইনিংয়ের গ্যাসের চাপ কম থাকায় মাঝে মাঝে চাল সিদ্ধ হয়না। এছাড়াও আমাদের ডাইনিং সিস্টেমটা টোকেন ভিত্তিক হওয়ার কারণে খাবারের মানের তারতম্য ঘটে। যেদিন বেশি টোকেন সেল করতে পারি সেদিন বাজার তুলনামূলক ভালো হওয়ায় খাবারের মানও ভালো করা সম্ভব হয়ে উঠে। অন্যথায় প্রয়োজনীয় বাজারের  অভাবের কারণেও আশানুরূপ রান্না করা সম্ভব না। মাঝে মাঝে হল ফান্ড থেকে টাকা দিলেও ভার্সিটি থেকে কোনো ভর্তুকি আসে না। ভার্সিটি থেকে নিয়মিত ভর্তুকি পেলে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish