বুটেক্স প্রতিনিধি
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) নিটিং ল্যাবে যুক্ত হলো ননওভেন নিটিং মেশিন। ছয় কোটি টাকার এই মেশিনটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ।
১৯২১ সালে ব্রিটিশ ইউভিং স্কুলের নামে প্রতিষ্ঠিত আজকের ‘বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়’ পূর্ণাঙ্গরূপে বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পায় ২০১০ সালে। বর্তমানে এটি দেশের একটি স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে ১০ বিভাগের আওতায় প্রতিবছর ৫০০’র অধিক টেক্সটাইল প্রযুক্তিবিদ তৈরি হচ্ছে।
জানা যায়, টেক্সটাইলের বিভিন্ন খাতের মধ্যে ননওভেন ফেব্রিক অন্যতম। ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী এর মার্কেটের আকার ৫৭ দশমিক ১৪ বিলিয়ন ইউএস ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নন-ওভেন ফেব্রিক বলতে প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম আঁশের বন্ধন অথবা ইন্টারলকিং অথবা উভয়ের মাধ্যমে তৈরি ছিদ্রযুক্ত টেক্সটাইল স্ট্রাকচার, যা যান্ত্রিক, রাসায়নিক ও তাপীয় অথবা দ্রাবক পদার্থের সাহায্যে অথবা উভয়ের সম্মিলনের মাধ্যমে তৈরি কাপড়কে বোঝায়।
নন-ওভেন পণ্যসমূহের মধ্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন, ডায়াপার ট্রেইনিং প্যান্টস, অ্যাপ্রোন ওয়াশ ক্লথ, টেবিল ক্লথ, লেন্স টিশু, প্যাকেজিং, টি ও কফি ব্যাগ বুক কভার, ম্যাপস, টাওয়েলস অন্যতম। মেশিনটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। তবে বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রযাত্রার ১৪ বছরেও বুটেক্সে ছিল না নন-ওভেনের বিশেষ কোনো মেশিন। তাই শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে নন-ওভেন শিক্ষারও কোনো ব্যবস্থা ছিল না।
বর্তমান বিশ্বের বিপুল চাহিদাকে মাথায় রেখে সাম্প্রতিক সময়ে বুটেক্সের নিটিং ল্যাবে আনা হয়েছে ‘নন-ওভেন প্রডাকশন লাইন’। মেশিনটির চীনে তৈরি। এর আমদানিকারক বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় টেক্সটাইল মেশিন নির্মাতা কমিটি স্পিনটেক্স টেকনোলজি লিমিটেড। মেশিনটিতে ডেলিভারি হেড দুইটি, একটি নিডল পাঞ্চ অন্যটি থার্মাল বন্ড। যার কাঁচামাল হিসেবে কটন, জুট, পলিস্টার, পলিপ্রপাইলিন প্রভৃতি ব্যবহার করা হয়। নিডল পাঞ্চ ও থার্মাল বন্ডের মাধ্যমে নন-ওভেন ফেব্রিক তৈরি করা হয়।
এখনো মেশিনের কার্যক্রম শুরু না হলেও চলতি বছরই তা শুরু হবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ড. মো ইমদাদ সরকার। তিনি বলেন, নন-ওভেন ফেব্রিকের প্রোডাকশনের ক্ষেত্রে অনেক বেশি পরিমাণে চালিয়ে দেখানো সম্ভব হবে না। তাছাড়াও থার্মাল বন্ড ডেলিভারি হেডের ক্ষেত্রে আমাদের আরো উন্নত ভেন্টিলেশন সিস্টেম প্রয়োজন।
ফেব্রিক ইন্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের টেকনিক্যাল কর্মকর্তা মো. ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘পূর্বে শিক্ষার্থীদের নন-ওভেন ফেব্রিক সম্পর্কে পড়ানো হলেও হাতে কলমে তাদের সেটি দেখানোর সুযোগ ছিল না, এখন তারা কাঁচালাম থেকে শুরু ফিনিশড প্রোডাক্ট পর্যন্ত দেখার সুযোগ পাবেন।”