Top 5 This Week

ভুয়া ভিডিও নিয়ে সমালোচনায় ড. ইকবাল

যবিপ্রবি প্রতিনিধি

যবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনের নিয়োগকৃত অধ্যাপক ড. ইকবাল কবির জাহিদ ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিজের সক্রিয়তা নিয়ে ভুয়া ভিডিও প্রচারণার অভিযোগ উঠেছে ইকবাল কবির জাহিদের বিরুদ্ধে ।

জানা যায়, গতকাল শনিবার (২৪ আগস্ট) “ভালোর সাথে যবিপ্রবি” নামক ফেসবুক পেইজ থেকে যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ড সদস্য ইকবাল কবির জাহিদের নামে একটি ভিডিও বুস্টিং করে প্রচার করা হয়। তাতে দাবি করা হয়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় থাকার পরেও ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচারের শিকার অধ্যাপক ড. ইকবাল কবির জাহিদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ইকবাল কবির স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দালাল ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্রআন্দোলনের বিপক্ষ শক্তি। তবে আন্দোলন চলাকালে গত ২৯ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষক সমাবেশে অংশ নেন ইকবাল কবির জাহিদ। এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষক সমাবেশের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। সেই ভিডিও প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ৫ আগস্ট শেখা হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সুবিধাবাদী ও স্বার্থান্বেষী মহল ইকবাল কবির জাহিদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারে লিপ্ত হয়ে তাঁর ক্ষতি সাধনে ও সম্মানহানির চেষ্টা চালাচ্ছে। যদিও সেখানে ইকবাল কবির জাহিদের একটি ছবি দেখানো হয় কয়েকজন লোকের মধ্যে তবে সেটি আসলেই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের কিনা এর কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

এদিকে এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষক- শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক ব্যক্তি লেখেন, কত বড় বাটপার অবৈধ টাকা রক্ষার্থে এখন কত কিছু করছে!সস্তা বস্তা পচা কন্টেট দিয়ে ভাল সাজা যায়না। গত ১৫ বছরের স্বৈরশাসক আমলের সকল ডীন ও কর্মকর্তা শেখ হাসিনার মদদপুষ্ট এবং আর্শীবাদ পুষ্ট। এরা রাতারাতি ছাতি পাল্টানো শুরু করেছে। আন্দোলন চলাকালে শিক্ষক সমিতির অনেকেই শিক্ষার্থীদের পাশে দাড়ালে অনেক শিক্ষককে মানববন্ধন করতেও বাধা দেওয়ারও অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শুরু থেকে রাজপথে থাকা পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ উসামা বলেন,  গত জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারা দেশ যখন উত্তাল, ঠিক তখন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চরম বৈষম্যমূলক এই কোটা প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের শুরু থেকেই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মহল থেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিলো এমনকি যারা অনলাইনে কথা বলছিলো বা পোস্ট দিচ্ছিলো তাদেরকেও বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছিলো।
ছাত্রদের এই যৌক্তিক আন্দোলনে শুরু থেকে যবিপ্রবির কিছু শিক্ষক সমর্থন দিলেও যে সকল শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলো তাদের নেতৃত্বে ছিলেন যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. ইকবাল কবির জাহিদ। তিনি আন্দোলন রত শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা, স্বাধীনতা বিরোধী বলে অভিহিত করেছেন। তার মত একজন দুর্নীতিবাজ, স্বৈরাচারের দালাল শিক্ষককে ইতিমধ্যে যবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। আমরা গতকাল থেকে দেখছি তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমানের জন্য অনলাইনে একটা মিথ্যা বানোয়াট ভিডিও তৈরি করে টাকা দিয়ে বুস্ট করে প্রচারণা চালাচ্ছে।আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই কোনো দুর্নীতিবাজ দালাল শিক্ষককে যবিপ্রবিতে ঢুকতে দেওয়া হবেনা।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: আমজাদ হোসেন বলেন, অধ্যাপক ড. ইকবাল কবির জাহিদ শিক্ষক সমিতির বর্তমান সভাপতি ও আগে যবিপ্রবি নীল দলের আহ্বায়ক। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরুতে অনেক শিক্ষক ছাত্রদের পাশে থাকলেও তার কোন অবস্থান ছিলনা। আন্দোলনের সময় শিক্ষক সমিতির ব্যানারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে যবিপ্রবির শিক্ষকগণ দাঁড়াতে চাইলে তিনি নানান ধরনের তালবাহানা করেছিলেন। এরপর ৪ আগস্ট সকলের চাপের মুখে পড়ে তিনি শিক্ষক সমিতির ব্যানারে একটি দায় সারা মানববন্ধন করেন। আসলে ছাত্র আন্দোলনে তার কোন ভূমিকা নেই। বরং উনি ওনার ক্যারিয়ারের জন্য উপাচার্যের সহয়তায় প্রো-ভিসি হওয়ার জন্য ঘাপটি মেরে বসে ছিলেন ।
ভিডিও তৈরি করে অনলাইনে বুস্টিং করে প্রচারণার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার কাছে তার বর্তমান কার্যকলাপ খুবই খারাপ লেগেছে । আমি শতভাগ নিশ্চিত যে তিনি এ কাজটি কাউকে ভাড়া করে করিয়েছেন। আমার মতে তার মত একজন অধ্যাপকের উচিত শিক্ষার্থীদের কথা মেনে নিয়ে শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস গড়তে সাহায্য করা, তার সকল অবস্থান থেকে সরে আসা এবং নিজের ভুল উপলব্ধি করে যবিপ্রবি পরিবারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. ইকবাল কবির জাহিদদের সাথে একাধিকবার মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি। পরবর্তীতে তাকে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোন জবাব দেননি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish