Top 5 This Week

মশার দখলে নোবিপ্রবির আবাসিক হল ; ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা

Spread the love

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) আবাসিক হলগুলোর শিক্ষার্থীরা মশার উপদ্রবে ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। মশার উৎপাত এতটাই বেড়েছে যে, একাডেমিক পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটার পাশাপাশি ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য মশাবাহিত রোগের ঝুঁকিতে পড়ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি বারবার হল প্রশাসনকে জানানো হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানান তারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আবাসিক হলগুলোর আশপাশে অপরিষ্কার নর্দমা, ব্লকের মাঝের জমে থাকা পানি, অপরিষ্কৃত ড্রেন এবং ঝোপঝাড় মশার বিস্তারের মূল উৎসে পরিণত হয়েছে। এসব কারণে সন্ধ্যার পর হলের রিডিং রুম ও নিচতলার রুমগুলো কার্যত মশার আস্তানায় পরিণত হয়েছে।

নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলের শিক্ষার্থী ফাহিমা ইয়াসমিন বলেন, “মশা ছাড়াও পোকামাকড়ের উপদ্রবে অতিষ্ঠ আমরা। নিচতলার রুমগুলোতে লালশুঁয়ো ও অন্যান্য পোকামাকড়ের কারণে ঘুমানো বা পড়াশোনা করাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। মশার কারণে রিডিং রুমেও শান্তিতে বসা যায় না।”

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক উকিল হলের শিক্ষার্থী মুজতবা ফয়সাল নাঈম বলেন, “ড্রেনগুলো মশার লার্ভায় ভর্তি। বারবার অভিযোগ দেওয়ার পরও হল প্রশাসন কোনো ওষুধ ছিটায় না। বর্ষা এলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠবে। গতবছর ডেঙ্গুতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আক্রান্ত হয়েছিলেন। এবারও সেই আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।”

বিবি খাদিজা হলের শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার পুষ্পিতা বলেন, “দিনের বেলাতেও মশার উপদ্রব চলছে। রিডিং রুম, ডাইনিং, টয়লেট, এমনকি বারান্দাও মশার বিচরণক্ষেত্র হয়ে গেছে। আমাদের দিনের বেলায়ও মশারিতে বসে পড়তে হয়। ঝোপঝাড় ও নর্দমাগুলোর জন্যই এই অবস্থা।”

ভাষা শহিদ আব্দুস সালাম হলের শিক্ষার্থী ফারুক মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, “ব্লকের মাঝখানে পানি জমে থাকে, আশেপাশে ঘন ঝোপঝাড়। দীর্ঘদিন ধরে এগুলো পরিষ্কার করা হচ্ছে না। আমাদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে এবং স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”

জুলাই শহিদ স্মৃতি ছাত্রী হলের শিক্ষার্থী সুবাইয়া আহমেদ বলেন, “রুম, নামাজ রুম, রিডিং রুম—সবখানে মশার উপদ্রব। রাতে এক্সামের জন্য পড়তে পারি না। অনেকে চুলকানি বা অন্যান্য চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আশেপাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা অত্যন্ত জরুরি।”

এ বিষয়ে ভাষা শহিদ আব্দুস সালাম হলের প্রভোস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ বলেন, “প্রত্যেক হলের জন্য ফগার মেশিন কেনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই এটি বাস্তবায়ন করা হবে।”

বিবি খাদিজা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল কাইয়ুম মাসুদ বলেন, “আমার হলে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও ফিনাইল ব্যবহার করা হয়। তবে ফগার মেশিনের ব্যবস্থা করতে যাচ্ছি। পৌরসভার সঙ্গেও সহযোগিতার চেষ্টা করছি, যদিও তাদের পূর্ণ সক্ষমতা না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না। তবুও আমরা নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”

শিক্ষার্থীরা বলছেন, পরিস্থিতি আর অবহেলার পর্যায়ে নেই। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে আগামি বর্ষায় এই সংকট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish