Top 5 This Week

মসজিদে নয় শিক্ষার্থীদের রাস্তায় জুম্মার নামাজ আদায়ে বাধ্য করেন আওয়ামীপন্থী শিক্ষক

Spread the love

যবিপ্রবি প্রতিনিধি

জুলাই বিপ্লবে ১৯ জুলাই ২০২৪ খ্রি. যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায়। দিনটি ছিলো শুক্রবার, ধর্মপ্রাণ মুসলিম শিক্ষার্থীরা আসেন যবিপ্রবির কেন্দ্রীয় মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করতে কিন্তু তাদেরকে নামাজ পড়তে দেননি আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সদস্য সচিব ড. মোঃ ফিরোজ কবির এমনকি শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে প্রবেশ করতে দেননি তিনি।

এ সময় শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন তিনি। এছাড়াও কেমিকৌশল বিভাগের এক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সকল দায়ভার নিজের উপর নিয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার অনুমতি চাইলে ড. ফিরোজ কবির ঐ শিক্ষক গালাগালি করে মারতে উদ্যত হন। বাধ্য হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে উত্তপ্ত পিচের ওপর দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন শিক্ষার্থীরা, এমনটি জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এ ঘটনায় ড. ফিরোজ কবিরসহ অভিযুক্তদেও বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থী রকিবুল হাসান বলেন, ঐ দিন আমরা জুম্মার নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদের উদ্দেশ্যে বের হই কিন্তু ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক পর্যন্ত আসার পর দেখি, আরও কয়েকজন দাঁড়িয়ে আছে। সবাইকে আটকে দেওয়া হয়েছে এবং নামাজের জন্য মসজিদে যাওয়া যাবে না বলে প্রধান ফটক বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

ভেতরে দু-তিনজন শিক্ষক ছিলেন, তাঁদের মধ্যে ফিরোজ কবির স্যার সরাসরি আমাদের নিষেধ করেন এবং জানান, কোনোভাবেই নামাজের জন্য ভিতরে প্রবেশ করা যাবে না। শিক্ষার্থীদের কথা শুনে রাফিউল স্যার বলেন, “মাত্র ৭/৮ জন শিক্ষার্থী নামাজ আদায় করলে তো কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এখানে কিসের নিরাপত্তাজনিত সমস্যা?” এই কথা বলার পর ফিরোজ কবির স্যার তাঁকে মারতে উদ্যত হন এবং অনেক উচ্চস্বরে কথা বলতে থাকেন।

ফিরোজ কবির স্যারের কথায় আপত্তি জানিয়ে স্নাতকোত্তরের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, নামাজ আদায় করতে আসা শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যে মোবাইলে ছবি ও ভিডিও করতে শুরু করেন স্যার। তিনি প্রভোস্ট নন, প্রক্টর নন বা কোনো প্রশাসনিক দায়িত্বেও নেই। তাহলে কেন তিনি বাঁধা দিচ্ছেন?

কিছুক্ষণ পর সাবেক প্রক্টর হাফিজ স্যার এসে নিরাপত্তা জনিত কারন দেখিয়ে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করেন। সেদিন আমাদের মসজিদে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমরা রাস্তায় উত্তপ্ত পিচের ওপর দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করি। আমার মনে হয়, স্বৈরাচারী হাসিনার পতন না হলে, ফিরোজ কবির স্যার যে ছবি ও ভিডিও নিয়েছেন, তা দিয়েই আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেন এবং শিবির ট্যাগ লাগিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিতেন।

এ বিষয়ে কেমিকৌশল বিভাগের ড. মোঃ রাফিউল হাসান বলেন, ঐদিন নামাজ পড়তে ক্যাম্পাসের সামনে গিয়ে দেখি, শিক্ষার্থীরা নামাজে যাওয়ার জন্য গেটের সামনে দাড়িয়ে আছে কিন্তু ভিতরে যেতে পারছে না। তখন আমি জিজ্ঞেস করি কেন ভিতরে যাইতে পারবেনা। গেটের ভিতরে ফিরোজ কবির স্যার, গালীব স্যারসহ আরো কয়েকজন শিক্ষক ছিলো, তারা আমাদেরকে গেটের সামনে রাস্তায় নামাজ পড়ার জন্য বলছিলো।

আমি বলছি, স্যার ওদের জিম্মাদার হয়ে আমি ওদের সব দায়িত্ব নিচ্ছি, ভিতরে যদি ওরা কোন সমস্যা করে তাহলে তার সব দায় আমার, এর জন্য যদি আমার চাকরি ছেড়ে দিতে হয় আমি দেবো স্যার। তখন ফিরোজ কবির স্যার একটু উত্তেজিত হয়ে বলে, তুমি চাকরি ছেড়ে দিবা কি দিবানা? সেটা তোমার ব্যক্তিগত ব্যাপার কিন্তু ভিতরে ঢোকা যাবে না। এরপরেও তো আমাকে আরো বিভিন্নভাবে এনএসআই, ডিজিএফআই দিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে।

ড. মোঃ ফিরোজ কবির সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, নামাজ পড়া নিয়েও একদল রাজনীতি করতে চাচ্ছে। আমি আল্লাহর কাছে এর বিচার দিলাম।
এ বিষয়ে সাবেক প্রক্টর ড. মোঃ হাফিজ উদ্দিনকে মুঠোফোনে কল দিলে তিনি পওে কথা বলবেন বলে জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish