চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, “গণ–অভ্যুত্থানের পর মানুষ লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সত্যিকার নেতৃত্ব দেখতে চায়। টাকা ও ক্ষমতা ব্যবহার করে দল গড়া মানুষ দেখতে চায় না। এমনকি যাঁরা আজকের তুর্কি–তরুণ, তাঁরাও অনেকে এই গড্ডালিকায় গা ভাসাবেন—এমনটা আশা করেনি কেউ। মানুষ ভরসা রাখতে চায়।”
শুক্রবার (২৭ জুন) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের জুলাই স্মৃতি হলে আয়োজিত প্রয়াত শ্রমিকনেতা মির্জা আবুল বশর স্মরণসভায় প্রধান আলোচক হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, “কাঙ্ক্ষিত সংস্কার নিয়ে এখনো সবাই একমত না হলেও অগ্রগতি হচ্ছে। কিছু মতপার্থক্য রয়েছে, কিন্তু সেগুলো লড়াইয়ের মাধ্যমে নিরসন সম্ভব। সংবিধান ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোর যে-সব সংস্কার জরুরি, সেগুলোর বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। মানুষ চায়, তাদের রক্তের বিনিময়ে দেশে সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হোক।”
তিনি আরও বলেন, “গণ–অভ্যুত্থান শেষ হয়ে যায়নি। যে দেশে কেউ ভাবেনি সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন হবে, সেই দেশে এখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১০ বছরের বেশি দায়িত্ব না থাকা, সংসদের উচ্চকক্ষ গঠন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ইত্যাদি বিষয়ে ঐকমত্য তৈরি হচ্ছে।”
সভায় প্রয়াত মির্জা আবুল বশরের রাজনৈতিক জীবন ও আদর্শ নিয়ে আলোচনা করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, “মির্জা আবুল বশর ছিলেন অত্যন্ত সৎ, প্রজ্ঞাবান এবং মেহনতি মানুষের লড়াইয়ের অগ্রসেনানী। তিনি জীবনের শেষদিন পর্যন্ত শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে গেছেন। তরুণদের প্রতি আমার আহ্বান—তাঁরা যেন এই দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত হয়। টাকা আর ক্ষমতার দাপটের কাছে হার না মেনে আদর্শকে বেছে নেয়।”
স্মরণসভাটি আয়োজন করে মির্জা আবুল বশর স্মৃতি পরিষদ। গত বছরের ৭ ডিসেম্বর ৬৫ বছর বয়সে মারা যান মির্জা আবুল বশর। তিনি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এবং গণসংহতি আন্দোলনের চট্টগ্রাম জেলার যুগ্ম নির্বাহী সমন্বয়কারী।
সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে সাতটা পর্যন্ত চলা এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলন চট্টগ্রাম শাখার আহ্বায়ক হাসান মারুফ রুমি। এতে শ্রমিক, পেশাজীবী, ছাত্র ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। উপস্থিত ছিলেন মির্জা আবুল বশরের পরিবারের সদস্যরাও।