Top 5 This Week

মুরাদনগরে গণপিটুনিতে নিহতদের কবর খুঁড়তে এগিয়ে আসেনি কেউ

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার মুরাদনগরের কড়ইবাড়ী গ্রামে গণপিটুনিতে মাদক বিক্রির অভিযোগে নিহত রোকসানা বেগম রুবি, তার ছেলে রাসেল ও মেয়ে জোনাকির দাফনে এগিয়ে আসেনি এলাকাবাসী। শুক্রবার (৪ জুলাই) রাতে পুলিশের উপস্থিতিতে গ্রাম পুলিশের কয়েকজন সদস্য তিনটি কবর খুঁড়ে দাফনের ব্যবস্থা করেন।

শুক্রবার রাত ৯টার দিকে মরদেহ কবরস্থানে পৌঁছালে কড়ইবাড়ী কবরস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়। রাত ১০টায় জানাজা এবং সাড়ে ১০টার দিকে দাফন কার্যক্রম শেষ হয়। কবর খোঁড়ার সময় সেনাবাহিনী, র‍্যাব ও পুলিশ সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল ৯টায় কড়ইবাড়ী গ্রামে এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে নিহত হন রোকসানা বেগম রুবি ও তার দুই সন্তান। এলাকাবাসীর অভিযোগ, রুবি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসার নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে স্থানীয়দের ক্ষোভ ছিল ব্যাপক।

শুক্রবার দিনভর মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পড়ে থাকলেও গ্রহণ করতে এগিয়ে আসেনি কেউ। বিকেলে নিহত রুবির জামাই মনির হোসেন মরদেহ গ্রহণ করেন। তবে দাফনের সময় এলাকার সাধারণ মানুষ কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

গণপিটুনির ঘটনায় কড়ইবাড়ী গ্রামে বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক। গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর বহু পরিবার এলাকা ছেড়ে গেছে। গ্রামজুড়ে সুনসান নীরবতা, রাস্তাঘাট ফাঁকা আর অধিকাংশ বাড়িতে ঝুলছে তালা। পুরুষ সদস্যদের কাউকে দেখা যাচ্ছে না।

বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান জানান, “নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, রাতের মধ্যেই মামলা দায়ের করবে। ইতোমধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।”

৩ জুলাই সকালে রুবির বাড়িতে প্রায় ৮০-৯০ জন লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। বাড়ির সামনে ইটপাটকেল ছোড়ার পর তারা ঘরে ঢুকে রুবিকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। তার দুই মেয়ে বের হলে তাদেরও মারধর করা হয়। ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনজন। গুরুতর আহত হন রুবির আরেক মেয়ে রুমা।

রুবির পুত্রবধূ মীম আক্তার বলেন, “তারা রুবিকে মারতে মারতে উঠানে ফেলে রাখে। পাশের ঘর থেকে মেয়েরা বের হলে তাদেরও পেটানো হয়। সবাই খুব নিষ্ঠুর ছিল।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish