● ১০-১২ বছর ধরে চলে আসছে তেল চুরির অভিযোগ
● প্রতি লিটার চোরাই তেল বিক্রি হয় ৯০ টাকায়
যবিপ্রবি প্রতিনিধি:
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) পরিবহন বিভাগের গাড়ি থেকে চুরিকৃত প্রায় ৬১ লিটার তেল জব্দ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (২১ এপ্রিল) ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় শিক্ষার্থীদের কাছে অপরাধ স্বীকার করেন শাপলা বাসের চালক ও হেলপার।
পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (ইএসটি) বিভাগের শিক্ষার্থী হান্নান হোসেন জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রাত চারটার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থান নেন। পরে সকাল ছয়টার দিকে সন্দেহভাজন শাপলা বাসটি ক্যাম্পাস গ্যারেজ থেকে বের হয়ে প্রধান ফটকের সামনে আসলে সেটিকে আটক করা হয়। বাসের বক্সে তল্লাশি চালিয়ে ৫০ লিটারের বেশি চোরাই তেল উদ্ধার করা হয়, যা পরে আনসার সদস্যদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, সকাল ছয়টায় বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসককে জানানো হলেও দেড় ঘণ্টা পরও তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হননি। এছাড়া প্রক্টরকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি বলে জানান উপস্থিত শিক্ষার্থীরা।
বাসচালকের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বাসচালক দুইটি গ্রুপে বিভক্ত এবং উভয় গ্রুপই তেল চুরিতে জড়িত। তিনি জানান, “প্রায় ১০-১২ বছর ধরে আমরা অল্প অল্প করে তেল জমাই। ২০-৩০ দিনে ২০-৩০ লিটার হলে তা শানতলায় ৯০ টাকা লিটার দরে বিক্রি করি। আজকের জব্দকৃত তেল শাপলা বাস এবং কোষাধ্যক্ষ মহোদয়ের গাড়ি থেকে নেওয়া হয়েছিল।”
তেল চুরির ঘটনা ঠেকাতে প্রশাসন আগে মাইলেজ সিস্টেম চালু করলেও তাতে কাজ হয়নি। চালকরা ইচ্ছাকৃতভাবে বাস ধীরে চালিয়ে অথবা নিয়মভঙ্গ করে বাসের ক্ষতি করে তেল বাঁচিয়ে তা পাইপের মাধ্যমে বের করে নেন। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সর্বোচ্চ দূরত্বে সর্বনিম্ন তেল খরচ নির্ধারণ এবং ট্যাংকের লকারে সেন্সর বসালে এ ধরনের চুরি রোধ করা সম্ভব।
পরিবহন প্রশাসক ড. মোঃ শিমুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষার্থীরা মৌখিকভাবে অভিযোগ দিয়েছে। দুটি কন্টেইনারে প্রায় ৫০ লিটারের বেশি তেল জব্দ করা হয়েছে। তদন্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে রেজিস্ট্রার দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এস. এম. নুর আলম বলেন, “শিক্ষার্থীরা দুটি তেলভর্তি কন্টেইনার আমাদের অফিসে জমা দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তাতে প্রায় ৬১ লিটার তেল ছিল। জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”