বিডিটাইম ডেস্ক
ইরান ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার খবরে বিশ্ববাজারে দেখা দিয়েছে বড় ধরনের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া। মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমেছে প্রায় ৪ শতাংশ। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলোয় সূচকের উল্লেখযোগ্য উত্থান হয়েছে। ডলারের মানও কমে গেছে।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা প্রশমিত হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে আস্থা ফিরেছে। ইরানের প্রতীকী প্রতিক্রিয়া এবং হরমুজ প্রণালি বন্ধ না হওয়ার ইঙ্গিতই বিশ্ববাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনেছে।
দিনের মধ্যে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৬৭ দশমিক ৬৮ ডলারে নেমে আসে, যা গত ১১ জুনের পর সর্বনিম্ন। একই সময়ে মার্কিন ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ৩ দশমিক ৬ শতাংশ কমে ৬৬ দশমিক ০২ ডলার হয়। পরে অবশ্য দুই ধরনের তেলের দাম কিছুটা পুনরুদ্ধার পায়।
শেয়ারবাজারেও দেখা গেছে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন। যুক্তরাষ্ট্রের এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক বেড়েছে ১ শতাংশ, নাসডাক সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ৩ শতাংশ। ইউরোপের স্টক্স ৬০০ সূচকও বেড়েছে ১ দশমিক ৩ শতাংশ, যেখানে এয়ারলাইনস ও ভ্রমণ সংস্থার শেয়ার ৪ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। তবে তেল ও গ্যাস কোম্পানিগুলোর শেয়ারে ৩ শতাংশের মতো পতন দেখা গেছে।
এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলেও ছিল প্রবল চাঙাভাব। এমএসসিআই সূচক (জাপান বাদে) বেড়েছে ২ দশমিক ২ শতাংশ এবং জাপানের নিক্কেই সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ১ শতাংশ।
ডলারের মানও আজ বড় ধরনের পতনের মুখে পড়েছে। জাপানি ইয়েনের বিপরীতে ডলারের দর ১৪৮ থেকে কমে ১৪৫ দশমিক ৪৩-এ নেমে আসে। ইউরোর মান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ১৬০২ ডলার। বিশ্লেষকেরা বলছেন, তেলের দাম কমায় আমদানি-নির্ভর দেশগুলোর মুদ্রা শক্তিশালী হচ্ছে, বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের মতো রপ্তানিকারক দেশের মুদ্রায় চাপ পড়ছে।
অন্যদিকে ফেডারেল রিজার্ভের নীতিনির্ধারকরা ইঙ্গিত দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে চাকরির বাজারে ঝুঁকি বাড়লে সুদ কমানোর সময় ঘনিয়ে আসছে। জুলাইয়ে সুদ কমানোর সম্ভাবনা ২২ শতাংশ হলেও, বাজার মনে করছে সেপ্টেম্বরে সুদ কমা প্রায় নিশ্চিত।
সব মিলিয়ে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণায় বিশ্ব অর্থনীতি সাময়িকভাবে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে। এখন বাজারের দৃষ্টি রয়েছে বাণিজ্য আলোচনার অগ্রগতি ও মুদ্রানীতির ভবিষ্যতে পথনির্দেশনার দিকে।