বিডিটাইম ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ পরিস্থিতি ও যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি জড়িত হওয়ার খবরে ফের বড় ধাক্কা খেল দেশের শেয়ারবাজার। রোববার লেনদেনের শুরুতেই বড় ধরনের দরপতনে দেখা দেয়।
তালিকাভুক্ত ৩৬০ কোম্পানির মধ্যে ৩৩৪টির শেয়ারের দর কমে গেছে। প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৭৬ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট বা ১.৬২ শতাংশ হারিয়ে নেমেছে ৪৬৭৭ পয়েন্টে। লেনদেন নেমে এসেছে ৩০০ কোটি টাকার নিচে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইরান-ইসরায়েল সংঘাত শুরুর পর থেকেই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ ছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ বোমারু বিমান দিয়ে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর খবর ছড়িয়ে পড়লে আতঙ্ক আরও বেড়ে যায়।
প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, “বাজার ‘ওভার রিয়েক্ট’ করছে। এর আগে পাকিস্তান-ভারত উত্তেজনার সময়ও এমনটা দেখা গেছে। যদিও ওইসব সংঘাতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব পড়েনি।”
তিনি বলেন, “এই বাজারে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো আস্থার ঘাটতি। ভালো কোম্পানির পিই রেশিও ৩ থেকে ৭–এ নেমে এসেছে, তবুও ক্রেতা নেই। বিনিয়োগকারীরা সামান্য শঙ্কাতেই শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন, আর কেউ নতুন করে কিনতে সাহস করছেন না।”
ইরান যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা হামলা না করায় কিছুটা স্বস্তির জায়গা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। মনিরুজ্জামান বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বলেছে ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস করেছে। তবু ইরান তাৎক্ষণিক পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। এটা অনেক খারাপ খবরের মধ্যে একটা ইতিবাচক দিক।”
তিনি আরও বলেন, “মূল উদ্বেগ হলো, দীর্ঘমেয়াদে হরমুজ প্রণালি বন্ধ হওয়া এবং তেলের মূল্যবৃদ্ধি। তবে এখনো হরমুজ প্রণালি খোলা আছে এবং জ্বালানি তেলের দামও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। তাই বিনিয়োগকারীদের এতটা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু ছিল না।”
রোববার দিনভর লেনদেনে মাত্র ১৫টি কোম্পানির শেয়ারের দর বেড়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৪টি শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩ থেকে ৫ শতাংশ। বিপরীতে ১৫৭টি শেয়ারের দাম কমেছে ৩ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে।
দিনশেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে মোট ২৭১ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।