বিডিটাইম ডেস্ক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামকে আপিল বিভাগে খালাস দেওয়ার প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের মশাল মিছিলে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে চারজন বাম ছাত্রনেতা ও একজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। পাল্টা অভিযোগে ইসলামী ছাত্রশিবিরও তাদের কর্মীদের আহত হওয়ার কথা জানিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৭ মে) রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ মার্কেট সংলগ্ন সড়কে। হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল এবং প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে প্রশাসন ভবনে অবস্থান নিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট।
কী ঘটেছিল?
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মশালমিছিলের ডাক দিয়েছিল গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। রাত ৮টা ১০ মিনিটের দিকে জোটের নেতাকর্মীরা মশাল জ্বালিয়ে স্লোগান দিতে শুরু করলে শাহবাগবিরোধী ঐক্যের ব্যানারে উপস্থিত থাকা শিবিরের নেতাকর্মীরা তাঁদের ওপর তেড়ে আসেন। একপর্যায়ে ইটপাটকেল ও চেয়ার ছোড়াছুড়ি হয়। এতে ছাত্র গণমঞ্চের সভাপতি নাসিম সরকার, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের তারেক আশরাফ, ছাত্র ইউনিয়নের কাইসার আহমেদ ও আহমেদ ইমতিয়াজ সৈকত এবং পত্রিকা দেশ রূপান্তরের প্রতিনিধি নোমান ইমতিয়াজ আহত হন।
পাল্টাপাল্টি অবস্থান
শিবির নেতাকর্মীরা দাবি করেন, তারা শাহবাগবিরোধী ঐক্যের অংশ হিসেবে কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। এ বিষয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি মোজাহিদ ফয়সাল বলেন, “এটি ছাত্রশিবিরের প্রোগ্রাম ছিল না, শাহবাগবিরোধী ঐক্যের উদ্যোগে কর্মসূচি হয়েছে।”
অন্যদিকে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, “আমাদের মশালমিছিলে অংশ নেওয়া প্রায় সবাই আহত হয়েছেন। এটা পূর্বপরিকল্পিত হামলা।”
ছাত্রদলের বিক্ষোভ
রাত ১০টা ১০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের জামাল নজরুল ভবনের সামনে থেকে ছাত্রদলের একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনে গিয়ে শেষ হয়। ছাত্রদল নেতারা স্লোগান দেন, “শিবিরের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না” এবং “নিরাপদ ক্যাম্পাস, ছাত্রদলের অঙ্গীকার”।
প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি
ঘটনার প্রতিবাদে রাতেই গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের নেতাকর্মীরা প্রশাসন ভবনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। তাঁরা স্লোগান দেন, “হামলাকারীর মদদদাতা, এই প্রশাসন চাই না” এবং “চব্বিশের বাংলা, রাজাকারের হবে না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, “প্রক্টোরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছে। উভয় পক্ষই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”