উচ্চশিক্ষার প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। “বিশ্ববিদ্যালয়” শব্দটার সাথে জড়িত হাজারো স্বপ্ন, আবেগ। এই জায়গাতে এসে স্বপ্ন আর বাস্তবতার নিরিখে জীবনের এক নতুন অধ্যায় সূচিত হয়। প্রচুর আশা আকাঙ্খা নিয়ে একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। স্বপ্ন পূরণ করতে বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডিতে এসে পৌঁছাচ্ছে তারা।
প্রত্যেক বছরই নবীন শিক্ষার্থীদের খুবই সুন্দর এবং গোছানোভাবে নবীনদের বরণ করে নেওয়া হয়। এর ব্যতিক্রম নয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় । নবীন শিক্ষার্থীদের আগমনের প্রথম দিনটা স্বরণীয় করে রাখতে কুবির বিভিন্ন বিভাগ তাদের স্ব স্ব শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বরণ করে নেওয়ার শেষ প্রস্তুতি চালাচ্ছে। কেননা, ২৭ই অক্টোবর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীন শিক্ষার্থী তথা ১৮ তম আবর্তনের ক্লাস শুরু হবে।
নবীনদের পদচারণায় মুখরিত হবে কুবি ক্যাম্পাস। তাদের বরণ করে নিতে নানা আয়োজন করছে বিভাগগুলো। প্রথম দিনে প্রত্যেক বিভাগ থেকে তাদের জন্য শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা মিলে একটি ওরিয়েনটেশনের ব্যবস্থা করবে। যার মাধ্যমে তাদেরকে ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক,শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য সকলের সাথে প্রাথমিকভাবে পরিচিত করানো হবে। এই অনুষ্ঠানে সবাইকে প্রাতিষ্ঠানিক ক্যালেন্ডার, ফুল, বই,কলম সহ বিভিন্ন উপহার দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হবে।
শুরু হবে এক ঝাঁক তরুন শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়ের পথচলা। সব সময় এই পথচলা মসৃণ হবে না। কিছুটা ভয় কিছুটা সংশয় নিয়ে সময় কাটবে। চারপাশের পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে শিক্ষার্থীদের কিছুটা হলেও সময় লাগবে। তবুও দিনশেষে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠবে তারা।
নতুন শিক্ষার্থীদের আগমন নিয়ে কুবির শিক্ষার্থীরা দুইদিন আগে থেকেই নানান আয়োজনের উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে। যেমন: ক্লাসরুম সাজানো, হাতে তৈরি বিভিন্ন উপহার বানানো ইত্যাদি।
নবীনদের আগমন নিয়ে কুবির গণিত বিভাগের ১৭ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী রুমা দেব বলেন,”বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যেকেই আসে তাদের স্বপ্ন বাস্তবাায়ন করতে এবং এখানে আসার আগে তাদেরকে ব্যাপক প্রতিযোগীতামূলক এডমিশন টেস্ট দিয়ে আসতে হয়,এডমিশন টেস্টে উত্তীর্ণ হয়ে বিশ্বাবিদ্যায়ে ভর্তি হতে পারার মাধ্যমে জীবনে স্বপ্ন পূরণের প্রথম ধাপ পেরিয়ে আসে। এক্ষেত্রে তাদের এই আনন্দ এবং উৎফুল্লতায় ক্যাম্পাস নতুনভাবে জাগ্রত হবে।”
১৭ তম আবর্তনের প্রত্নতত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ ফেরদৌস জিদনী নবীনদের উদ্দেশ্যে বলেন,”নতুন শিক্ষার্থীদের উচিত হবে প্রথম থেকেই প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের সাথে যুক্ত থাকা যাতে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।”
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে যেনো নতুনদের আাসার অপেক্ষা, সকল শিক্ষার্থীরা নবীনদের সাদরে গ্রহণ করে নিতে উন্মুখ। পাশাপাশি নতুন পরিবেশে তারা যেনো কোন অসুবিধায় না পরে সে বিষয়েও পূর্বের শিক্ষার্থীরা সচেতন। কুবির কৃষ্ণচূড়া রোড,পাহাড়তলী রোড, শহীদ মিনার,সেন্ট্রাল ফিল্ড সবকিছুই যেনো মুখ চেয়ে আছে ১৮ তম আবর্তনের প্রতীক্ষায়। যেনো নব উন্মাদনায় ক্যাম্পাসকে করবে মুখরিত তারা। এই ক্যাম্পাসের স্বপ্নময় জীবনের সাথে যুক্ত হবে আরও একরাশ নতুন প্রত্যাশা, ক্যাম্পাসকে জাগিয়ে তুলবে আরও একবার।
লেখকঃ শিক্ষার্থী,
আফরিন আলম অথৈ,
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ,
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।