যবিপ্রবি প্রতিনিধি:

বন্ধ লিফট চালুর দাবিতে প্রকৌশল ও পরিকল্পনা উন্নয়ন ও পূর্ত ( পিএনডি) দপ্তর ঘেরাও  করেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় সংশ্লিষ্ট দুই দপ্তরকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে লিফট চালুর আল্টিমেটাম দেয় তারা। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএনডি ও প্রকৌশল দপ্তরের সম্মুখে এ কর্মসূচি পালন করে আন্দোলনকারীরা। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন তাঁরা।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,  বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের ২ টি লিফট বাদে, মুনশি মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ হল ও বীর প্রতীক তারামন বিবি হলের সবগুলো লিফট বন্ধ থাকায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। হলগুলোতে লিফট চালু না থাকায় ৪ টি ফ্লোরে প্রায় ১০০০ শিক্ষার্থীকে সিট বরাদ্দ দিতে পারছেনা হল প্রশাসন। ফলে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে মেসে থাকছেন শিক্ষার্থীরা। এনিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাঁরা।

জানা যায়, ১৪টি লিফট স্থাপন নিয়ে নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। দূর্নীতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবং লিফটের মান নিয়ে প্রশ্ন থাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাসিন্দা ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ যশোর জেলা শাখার প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল করিম। মহামান্য হাইকোর্ট তার রিটপিটিশন গ্রহণ করে তদন্তের আদেশ দিয়েছিলেন। তদন্তাধীন বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় লিফটগুলো বন্ধ রয়েছে বলে দাবি করছে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন এবং হলের লিফটগুলো অনেকদিন ধরেই বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। যার মূল কারণ দূর্নীতি এবং কর্মকর্তাদের অপতৎপরতা। শুধু মাত্র লিফট না থাকায় মুন্সী মেহেরুল্লাহ হল ও বীরপ্রতীক তারামন বিবি হল পুরোপুরি চালু হয়নি।যার কারণে হল দুটিতে উঠতে পারছে না এক হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থী। এছাড়া একাডেমিক ভবনেরও একই দশা। পায়ে হেঁটে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপরে উঠে ক্লাস -পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হচ্ছে। যার কারণে আজ সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তর ও পিএনডি অফিস ঘেরাও করে তাদের কাছে জবাবদিহিতা চায়। কিন্তু তারা সঠিক জবাব না দেওয়ায় তাদেরকে আগামীকাল দুপুর পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। আগামীকালের মধ্যে  যদি তারা এটা সমাধান না করতে পারি তাহলে এই দুই দপ্তরে তালা লাগানো হবে।

এঘটনায় পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও পূর্ত দপ্তরের ডেপুটি পরিচালক আব্দুর রউফের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনোভাবেই মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আব্দুল মজিদ বলেন, লিফট সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে সকল ডিন, পিএনডি, প্রকৌশল দপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে জরুরি সভা করেছি। সভায় লিফট জনিত সকল সমস্যা ও জটিলতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। লিফট নিয়ে এমনটা কেন হলো, সেজন্য একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। বিষয়টি মহামান্য হাইকোর্ট এবং দুদকে তদান্তধীন রয়েছে, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আইনগতভাবে দ্রুত কিভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায় সেবিষয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা আশাবাদী দ্রুত সকল সমস্যার সমাধান হবে।