Top 5 This Week

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে তৃতীয় দিনের বিক্ষোভ

বিডিটাইম ডেস্ক

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রত্যাহারের দাবিতে সচিবালয়ের ভেতরে টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

সোমবার (২৬মে) সকাল থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভে বিপুলসংখ্যক কর্মচারী নিজ নিজ দপ্তর ছেড়ে মিছিল ও সমাবেশে অংশ নেন। ‘বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম’-এর ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

কালো আইন অভিহিত করে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

কর্মচারী নেতারা সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশকে “কালো আইন” আখ্যা দিয়ে জানিয়েছেন, এটি সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। মঙ্গলবারও সচিবালয় চত্বরে মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. বাদীউল কবীর বলেন, “এই কালো আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আজ (মঙ্গলবার) সকাল ১০টায় সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে বাদামতলায় সমবেত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।” আরেক কো-চেয়ারম্যান মুহা. নূরুল ইসলাম জানান, সারা দেশের কর্মচারীরা তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

সচিবালয়ে দর্শনার্থী প্রবেশ নিষেধ

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সচিবালয়ে আজ মঙ্গলবার সব ধরনের দর্শনার্থীর প্রবেশ বন্ধ থাকবে। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) আগেই সচিবালয় ও এর আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ, মিছিল ও শোভাযাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, যা পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।

কী আছে নতুন অধ্যাদেশে?

গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮’ সংশোধনের প্রস্তাব পাস হয় এবং রোববার তা অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হয়। এতে সরকারি কর্মচারীদের চারটি অপরাধে ‘অসদাচরণে’ দণ্ডযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেমন: অনানুগত্য বা শৃঙ্খলা ভঙ্গ, অনুমতি ছাড়া কর্মস্থলে অনুপস্থিতি, অন্য কর্মচারীকে কর্তব্যপালন থেকে বিরত রাখতে উসকানি, কর্তব্য পালনে বাধা দেওয়া

অভিযোগ গঠনের ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং তার ভিত্তিতে আরও ৭ দিনের মধ্যে দণ্ড আরোপের বিধান রয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে না, কেবল পুনর্বিবেচনার আবেদন করা যাবে।

কলমবিরতিতে যাচ্ছে ২৫টি ক্যাডার

সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে থাকা বৈষম্যের প্রতিবাদে প্রশাসন ক্যাডার ছাড়া সিভিল সার্ভিসের ২৫টি ক্যাডার আজ থেকে দুই দিনের কলমবিরতি পালন শুরু করেছে। এ কর্মসূচির আয়োজক ‘আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’।

সংগঠনটির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিভিন্ন ক্যাডারের ১২ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলার প্রতিবাদে, ক্যাডারভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবি, উপসচিব পদে কোটা বাতিল এবং সকল ক্যাডারের মধ্যে সমতা আনার দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। আজ ও আগামীকাল সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে। তবে হাসপাতালের জরুরি সেবা এই কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।

সংগঠনটির অভিযোগ, কিছু নির্দিষ্ট ক্যাডারের স্বার্থে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিসংখ্যান, ডাক ও পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত জটিলতা সৃষ্টি করা হচ্ছে, অথচ প্রশাসন ক্যাডারের ক্ষেত্রে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কি?

আন্দোলনরত কর্মচারী নেতারা জানিয়েছেন, অধ্যাদেশ প্রত্যাহার না হলে আন্দোলনের মাত্রা আরও বাড়বে। সরকার এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles

en_USEnglish