নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) স্বৈরাচার আমলে চাকরিচ্যুত হওয়া দুই শিক্ষক ও পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পুনরায় চাকরিতে ফিরিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিষয়টি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫তম রিজেন্ট বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত হিসেবে গৃহীত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, পূর্ববর্তী স্বৈরাচার সরকারের সময় রাজনৈতিক বিরোধ ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে বিভিন্ন সময় এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে যথাযথ তদন্ত ছাড়াই চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। গত বছরের জুলাই মাসে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারের পতনের পর চাকরি ফিরে পেতে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন।
সূত্র অনুযায়ী, পুনর্বহাল হওয়া দুই শিক্ষক হলেন—শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক মো. মোকাররম হোসেন এবং ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE) বিভাগের প্রভাষক মো. রশিদুল ইসলাম। তবে রশিদুল ইসলাম বর্তমানে ওই বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে নতুনভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন।
পুনর্বহাল হওয়া পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারী হলেন—সেকশন অফিসার (অস্থায়ী) ইব্রাহীম খলীল, এফটিএনএস বিভাগের ল্যাব টেকনিশিয়ান মাহিন হোসেন, নিম্নমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর আব্দুল মান্নান, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন এবং মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম।
চাকরি ফিরে পাওয়া এক কর্মকর্তা বলেন, “পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতা অর্জন করে চাকরিতে যোগ দিই। কিন্তু পরে দেখা যায় আমরা নিরপেক্ষ অবস্থানে আছি—কারো অনুসারী না—এ কারণে আমাদের নিয়োগ স্থগিত করা হয় এবং নানা ধরনের অপপ্রচার চালানো হয়।”
অন্যদিকে ইব্রাহীম খলীল বলেন, “লঘুদণ্ডের অজুহাতে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল, যদিও আমি সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছিলাম। পরবর্তীতে আমি আদালতের শরণাপন্ন হই। বর্তমান প্রশাসন চাকরি ফিরিয়ে দিলেও বরখাস্তকালীন সময়টিকে লঘুদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করেছে।”
এ বিষয়ে নোবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, “তারা যথাযথভাবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই পূর্ববর্তী প্রশাসন তাদের বরখাস্ত করে। পরবর্তীতে প্রাপ্ত লিগ্যাল নোটিশ, তদন্ত কমিটি এবং রিভিউ কমিটির সুপারিশ অনুসারে রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্তে তাদের নিয়োগ স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “একজন প্রভাষক চাকরি ফিরে পেলেও সে পদে যোগ না দিয়ে নতুন করে সহকারী অধ্যাপক পদে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগ পেয়েছেন—এটা তার প্রকৃত যোগ্যতারই প্রমাণ।”