জয়পুরহাট প্রতিনিধি:
১৩ বছর পুরোনো একটি লাঠিপেটার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসমত আলীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি গত ১৩ জুন ওসি হিসেবে ওই থানায় যোগ দিয়েছিলেন।
ভিডিওটি গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, জয়পুরহাট শহরে জামায়াতে ইসলামীর একটি মিছিলে পুলিশের লাঠিচার্জে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) হাসমত আলী। জানা গেছে, এই ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১২ সালের ৪ নভেম্বর। সেদিন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মুক্তির দাবিতে জামায়াতের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করলে পুলিশ মিছিলে লাঠিচার্জ করে। এতে দলের জেলা শাখার তৎকালীন সেক্রেটারি নজরুল ইসলামসহ অনেকে আহত হন এবং পুলিশের গুলিতে বদিউজ্জামান নামের এক শিবিরকর্মী নিহত হন।
তৎকালীন উপপরিদর্শক হিসেবে অভিযানে অংশ নেওয়া হাসমত আলীকে ১৩ বছর পর ক্ষেতলাল থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হলে ভিডিওটি নতুন করে ভাইরাল হয় এবং ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। এর প্রেক্ষিতে বুধবার(২৫ জুন) সকালে তিনি থানার দায়িত্ব হস্তান্তর করে গোপনে থানা ত্যাগ করেন।
ক্ষেতলাল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম কামাল সাংবাদিকদের জানান, ওসি হাসমত আলী সকালে সরকারি মুঠোফোনসহ তাঁকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন এবং পুলিশ লাইনসে যাওয়ার কথা বলেন।
ঘটনার বিষয়ে জয়পুরহাট জেলা জামায়াতের নেতারা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ক্ষেতলাল উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি শামীম হোসেন মণ্ডল বলেন, “তৎকালীন এসআই হাসমত আলী আমাদের নেতাকর্মীদের বেধড়ক লাঠিপেটা করেছিলেন। সেদিন পুলিশের গুলিতে আমাদের এক কর্মী বদিউজ্জামান শহীদ হন।”
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব গণমাধ্যমকে জানান, “ওসি হাসমত আলীকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। জয়পুরহাট সদর থানায় দায়িত্বে থাকা অবস্থায় জামায়াতের মিছিলে লাঠিপেটার যে ভিডিওটি সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে, সেটিকে কেন্দ্র করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
এই ঘটনায় জেলা জুড়ে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের মতে, পুরোনো বিতর্কিত কর্মকাণ্ডকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগে সতর্কতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন।