সিকৃবি প্রতিনিধি
বাংলাদেশের উত্তরপূর্ব কোণে অবস্থিত হাওর, সমতলভূমি ও টিলাবেষ্টিত সিলেট বিভাগে কৃষি শিক্ষা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ২০০৬ সালের দোসরা নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। হাঁটি হাঁটি পা পা করে শৈশব শেষ করে কৈশরে পা দিয়েছে হাওরের এই শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ। বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিশেষ দিনকে ঘিরে কোন আয়োজন না থাকলেও ২০ নভেম্বরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন করবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম।
এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সিকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম বলেন, আজ পার্শ্ববর্তী সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে। পাশাপাশি গত কয়েকদিন ছাত্রদের আন্দোলনের কারণে দিবসটি ঘিরে প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা উন্নয়ন কাজে আমাকে ঢাকায় যেতে হচ্ছে। তাই এবার তারিখটা একটু পিছিয়ে দিচ্ছি যাতে একটু জাঁকজমকপূর্ণভাবে আয়োজন করতে পারি।
উপাচার্য আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ছাত্রশিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে সুন্দরভাবে আয়োজিত হবে। আগামীকাল আমি সকল শিক্ষকদের এবং ছাত্রদের মতামতের ভিত্তিতে এই আয়োজনের তারিখটি ঠিক করব। আশাকরি ২০ তারিখের মধ্যেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদ্যাপন করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।
প্রসঙ্গত, প্রাণীসম্পদে ভূমিকা রাখতে ১৯৯৫ সালে সিলেট নগরীর আলুরতল এলাকায় প্রতিষ্ঠিত সিলেট সরকারি ভেটেরিনারি কলেজকে সিলেট বিভাগের কৃষি শিক্ষা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ২০০৬ সালের ০২ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠার শুরুতে তিনটি অনুষদ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও পর্যায়ক্রমে পাল্লা দিয়ে সাতটি অনুষদ চালু হয়। অনুষদগুলোর মধ্যে রয়েছে ভেটেরিনারি এনিম্যাল এন্ড বায়োমেডিকেল সায়েন্সেস অনুষদ, কৃষি অনুষদ, মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ, কৃষি প্রযুক্তি ও প্রকৌশল অনুষদ, কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, জীবপ্রযুক্তি ও জীন প্রকৌশল অনুষদ এবং পোস্ট গ্রাজুয়েশন অনুষদ।
সকল অনুষদের মাধ্যমে কৃষি বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রসরমাণ বিশ্বের সাথে সংগতি রক্ষা ও সমতা অর্জন এবং জাতীয় পর্যায়ে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি, আধুনিক জ্ঞানচর্চা ও গবেষণা কার্য পরিচালনা করা হয়। ৭টি অনুষদে সর্বমোট ৪৭টি বিভাগ রয়েছে। এছাড়া মাঠগবেষণা কেন্দ্রসহ উন্নত ল্যাবরেটরি ছাড়াও রয়েছে একটি ভেটেরনারি টিচিং হাসপাতাল।
সিলেট বিভাগীয় শহর থেকে প্রায় ০৭ কি.মি উত্তর-পূর্বে পাহাড় বেষ্টিত প্রায় ৫০ একর এলাকা নিয়ে গড়ে উঠেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদীয় ভবন, প্রশাসনিক ভবন ও আবাসিক ভবন ছাড়াও নির্মাণাধীন রয়েছে অডিটোরিয়াম ও দৃষ্টিনন্দন প্রধান ফটক।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের জন্য ৭টি আবাসিক হল রয়েছে। এরমধ্যে ছাত্রদের জন্য ৫টি এবং ছাত্রীদের জন্য রয়েছে ২টি হল। হলগুলো হলো- হুমায়ূন রশীদ চৌধুরি হল, শাহ এ. এম. এস. কিবরিয়া হল, আব্দুস সামাদ আজাদ হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, হজরত শাহপরাণ (র.) হল। ছাত্রী দুটি হলের মধ্যে সুহাসিনী দাস হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হল।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে রাজনৈতিক দলের সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় আরও কিছু সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- প্রাধিকার, কৃষ্ণচূড়া সাংস্কৃতিক সংঘ, ডিবেটিং সোসাইটি, ইয়ুথ ক্লাব, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (সিকৃবিসাস)।