আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্তের পর এবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ গাজা যুদ্ধের নামে মানবিক বিপর্যয় আরও ঘনীভূত করতে নতুন পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছেন। ইসরায়েলি পত্রিকা হারেতজ–এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাটজ দেশটির সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন, গাজার রাফার ধ্বংসস্তূপের ভেতরে একটি তথাকথিত ‘মানবিক শহর’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা তৈরি করতে।
এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, মূলত গাজার আল-মুওয়াসি অঞ্চলে অবস্থানরত প্রায় ৬ লাখ ফিলিস্তিনিকে নিরাপত্তা যাচাই শেষে সেই শহরে জোরপূর্বক স্থানান্তর করা হবে। কাটজ স্পষ্ট করে বলেন, এই ‘মানবিক শহরে’ একবার প্রবেশের পর কোনো বাসিন্দাই আর বাইরে যেতে পারবে না, অর্থাৎ কার্যত এটি একটি বৃহৎ বন্দিশিবির বা ওপেন-এয়ার প্রিজন-এ পরিণত হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি বাস্তবায়িত হলে দ্বিতীয়বারের মতো নাকবা(ফিলিস্তিনি জনগণের গণচাপানো ও উদ্বাস্তু হওয়ার ভয়াবহ ইতিহাস) ঘটতে পারে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো এরই মধ্যে একে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সরাসরি লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী যেভাবে এই ‘মানবিক শহর’ পরিকল্পনার কথা বলছেন, তা আদতে একটি আধুনিক বন্দিশিবির ছাড়া কিছুই নয়। খাবার, পানি, চিকিৎসা, চলাচল এমনকি যোগাযোগ ব্যবস্থাও পুরোপুরি ইসরায়েলি সেনা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক রেড ক্রস আগে থেকেই বলে আসছে, গাজায় জীবনযাত্রার ন্যূনতম উপকরণ নেই। এর মধ্যেই ইসরায়েলের এমন পরিকল্পনা আন্তর্জাতিকভাবে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ‘কে হামাসপন্থী, কে নয়’ তা নির্ধারণের নামে যাদের আটক করা হচ্ছে, তাদের অধিকাংশই হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ। বহু ফিলিস্তিনি পুরুষকে বিনা অভিযোগে আটক করে দিনের পর দিন আটকে রাখা হচ্ছে।
জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা এই পরিকল্পনাকে গণউচ্ছেদ, গণবন্দিত্ব এবং জাতিগত নির্মূলের পূর্বাভাস হিসেবে উল্লেখ করছেন।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, ইসরায়েল এই পরিকল্পনার মাধ্যমে গাজার বাকি অংশ থেকেও ফিলিস্তিনিদের মুছে দিতে চাইছে।