বিডিটাইম ডেস্ক:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল জেলা কমিটির তিন নেতা সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেছেন। রোববার (১ জুন) রাতে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
পদত্যাগকারী নেতারা হলেন—জেলা কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক হাসিবুল আলম (তুরান), যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম (আবিদ) ও সদস্য তাহসিন আহমেদ (রাতুল)।
সংবাদ সম্মেলনে হাসিবুল আলম লিখিত বক্তব্যে জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে একাধিক অনিয়ম, তদবির ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, জেলা কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মহসিন উদ্দিন তাঁর (হাসিবুলের) নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি ও অপ্রীতিকর কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশপন্থী একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত গড়ে তোলা। কিন্তু কিছু নেতা আন্দোলনকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করছেন। প্রকৌশল দপ্তরে তদবির, ঠিকাদারি এবং সরকারি সুবিধা আদায়ের মাধ্যমে সংগঠনটি দিন দিন গণবিরোধী প্ল্যাটফর্মে পরিণত হচ্ছে।”
হাসিবুল আলম আরও বলেন, “দেশের প্রান্তিক জনগণের সঙ্গে না থেকে কিছু নেতাকর্মী সরকারি অফিসে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁরা আগ্রাসী, দখলবাজি, সাম্প্রদায়িক উসকানি, মামলা–বাণিজ্যের মতো অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছেন, যা জুলাই অভ্যুত্থানের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।”
তিনি জানান, “শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করতে পারি না। তাই দল থেকে সরে যাওয়াটাকেই নৈতিক দায়িত্ব মনে করছি।”
অভিযুক্ত জেলা কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মহসিন উদ্দিন বলেন, “চাঁদাবাজির অভিযোগ মিথ্যা। পুলিশ কমিশনার বিষয়টি তদন্ত করেছেন এবং তাতে আমাকে নির্দোষ প্রমাণ করেছেন। উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বাধাগ্রস্ত করতেই এসব অভিযোগ আনা হয়েছে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল জেলা আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন বলেন, “তাঁরা আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই পদত্যাগ করেছেন। যদি অনিয়ম হতো, তাঁরা তখনই প্রতিবাদ করতে পারতেন। এখন অভিযোগ করে দল ছাড়ার অর্থ হলো সংগঠনের বদলে তাঁদের মনোভাব পাল্টেছে।”
নেতৃত্ব পর্যায়ে এই বিভাজনের ফলে বরিশাল জেলা শাখায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অভ্যন্তরীণ সংকট আরও প্রকট হলো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।