কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লার মুরাদনগরে নারীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের আলোচিত মামলায় গ্রেফতার চার আসামিকে শনিবার (৫ জুলাই) থেকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করছে পুলিশ। শুক্রবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মুরাদনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুহুল আমিন।
তিনি জানান, পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দায়ের করা মামলায় ছাত্রলীগের নেতা মোহাম্মদ আলী সুমনসহ চারজনকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শনিবার সকালে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাদের থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হবে। তদন্ত কর্মকর্তার আশা, এই রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলবে।
এসআই রুহুল আমিন বলেন, মামলার অন্যতম প্রধান আসামি শাহ পরানকে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) কুমিল্লার বুড়িচং এলাকা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। তিনি অভিযুক্ত ধর্ষক ফজর আলীর ছোট ভাই এবং ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার মূল পরিকল্পনাকারী বলে জানিয়েছেন র্যাব-১১, সিপিসি-২ এর উপপরিচালক মাহমুদুল হাসান।
র্যাব বলছে, ভাই ফজর আলীর সঙ্গে পারিবারিক দ্বন্দ্ব থেকেই ছোট ভাই শাহ পরান এই পরিকল্পনা করেন এবং ভিডিও ছড়িয়ে দেন।
ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ফজর আলীকে ২৮ জুন ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তিনি পুলিশ পাহারায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার শরীরে একাধিক হাড় ভাঙার চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তার অবস্থা ভালো না হওয়ায় তাকে এখনই আদালতে নেওয়া যাচ্ছে না।
গত ২৬ জুন রাতে এক নারীকে ধর্ষণ ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এরপর স্থানীয় কয়েকজন সুমন, রমজান, আরিফ ও অনিক—ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। তারা পরবর্তীতে অভিযুক্ত ফজর আলীকেও মারধর করে। পরদিন ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা সারা দেশে তীব্র আলোড়ন তোলে।
পরে নির্যাতিত নারী নিজেই থানায় মামলা করেন। মুরাদনগর থানা পুলিশ পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করে অভিযুক্ত চার যুবককে গ্রেফতার করে।
পর্নোগ্রাফি মামলায় গ্রেফতারকৃতরা হলেন: মো. সুমন, রমজান আলী, মো. অনিক, মো. আরিফ
সবশেষে, মূল ভিডিও ছড়ানোর হোতা শাহ পরানকেও বৃহস্পতিবার বিকেলে বুড়িচং থেকে গ্রেফতার করে র্যাব-১১।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রুহুল আমিন জানিয়েছেন, “মামলার প্রত্যেক আসামিকে পর্যায়ক্রমে আইনের আওতায় আনা হবে। ঘটনায় যারাই জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”