ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দিঘিরপাড় গ্রামে রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে মোশাররফ হোসেন (৫৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় নারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। তাদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে দক্ষিণ পাড়ায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত মোশাররফ হোসেন ওই গ্রামের মৃত শমসের আলী মোল্লার ছেলে। তাকে নিয়ে রাজনৈতিক মতবিরোধ রয়েছে—বিএনপির দাবি, তিনি তাদের সমর্থক; অপরদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ বলছে, মোশাররফ ছিলেন তাদের কর্মী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামের উত্তরপাড়ায় রোববার সন্ধ্যায় বিএনপি সমর্থক টিপু ও আওয়ামী লীগ সমর্থক মুকুলের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এর জের ধরে রাতেই সাবেক ইউপি মেম্বার ও আওয়ামী লীগ নেতা আলিমুদ্দিনের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষ বিএনপি নেতা আমজাদ বিশ্বাসের সমর্থকদের কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালানো হয়, যাতে ৬ জন আহত হন।
পরদিন সোমবার দুই পক্ষ আবার সংঘর্ষে জড়ায়, যেখানে আরও কয়েকজন আহত হন। মঙ্গলবার পরিস্থিতি থমথমে থাকলেও বুধবার সকালেই ফের দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। গ্রাম্য অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে উভয়পক্ষ একে অপরের ওপর হামলে পড়ে। এতে মোশাররফসহ অন্তত ১০ জন গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মোশাররফকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ আগেই পরিস্থিতির উত্তপ্ত হওয়ার খবর জানলেও যথাসময়ে ব্যবস্থা নেয়নি। সংঘর্ষের সময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, “গ্রাম্য আধিপত্যের জেরে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।”
এদিকে সংঘর্ষের পর এলাকার অনেক পরিবার বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। দুপুরে জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান।