বিডিটাইম ডেস্ক
পুনর্বাসনসহ দুটি প্রধান দাবি পূরণে দীর্ঘদিন ধরে পদক্ষেপ না নেওয়ায় ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ভর্তি থাকা জুলাই আন্দোলনে চোখ হারানো চার যুবক আজ রোববার (২৫ মে) দুপুরে পরিচালকের কক্ষে চলমান এক বৈঠক চলাকালে বিষপান করেন।
বিষপানকারী চারজন হলেন—শিমুল, মারুফ, সাগর ও আখতার হোসেন (আবু তাহের)। ঘটনার পরপরই তাদের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে তারা শঙ্কামুক্ত।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে জুলাই ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) সঙ্গে এক বৈঠক চলছিল। এ সময় আহত চার যুবক নিজেদের দাবি নিয়ে সেখানে যান। সিইও তাদের অপেক্ষা করতে বললে, তারা ক্ষুব্ধ হয়ে সেখানেই আগেভাগে সঙ্গে আনা বিষ পান করেন।
জুলাই গণ-আন্দোলনে আহতরা অভিযোগ করেছেন, গত ৯ মাসেও তাদের উন্নত চিকিৎসা কিংবা পুনর্বাসনের বিষয়ে সরকার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। শুধু আশ্বাস দেওয়া হলেও, বাস্তবে কিছুই হয়নি বলে জানান তারা। একজন আহত বলেন, “এই সরকারের কাছ থেকে কিছু পেতে হলে আন্দোলনে নামতেই হয়। শান্তিপূর্ণভাবে কিছু চাওয়া যায় না।”
তারা আরও অভিযোগ করেন, শুধু সরকার নয়—বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, গণঅধিকার—সব রাজনৈতিক দলই কেবল নিজেদের স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত। আহতদের পুনর্বাসন বা সহযোগিতায় কারও উদ্যোগ নেই।
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী জানান, বিষপানকারী চারজন বর্তমানে সুস্থ। তিনি বলেন, “মিটিং চলাকালে তারা দাবি নিয়ে কথা বলতে এসেছিলেন। সিইও বলেছিলেন পরে কথা বলবেন। তারা তখন বের হয়ে বিষ পান করেন।”
তিনি আরও জানান, “বর্তমানে হাসপাতালে ৫৫ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন, যাদের মধ্যে ৪৬ জন সুস্থ। তবে অনেকেই মানসিকভাবে ভালো নেই। তারা মনে করছেন, হাসপাতাল ছাড়লে পুনর্বাসনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।”
ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন আরও সতর্ক অবস্থানে গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিষয়টি কেন্দ্রীয় পর্যায়েও গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।