বিডিটাইম ডেস্ক
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মৌলবাদীদের একত্র করে ক্ষমতায় থাকার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
রোববার (২৫ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘দেশ বাঁচাও বন্দর বাঁচাও আন্দোলন’-এর এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
গয়েশ্বর বলেন, “আমরা ন্যাশনালিস্ট পার্টি। এখন যারা জাতীয়তাবাদী শক্তির সঙ্গে আছে, তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব মূলত সোশ্যাল ইকোনমি বনাম ক্যাপিটেল ইকোনমি। এই দ্বন্দ্বকে ইউনূস সাহেব এমনভাবে বিভক্ত করেছেন যে, মৌলবাদীদের এক জায়গায় এনে ফেলেছেন ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য।”
তিনি আরও বলেন, “পৃথিবীতে যে শক্তিকে আপনি সন্তুষ্ট করতে চান, সেই শক্তিই (যুক্তরাষ্ট্র) একসময় লাদেনের জন্ম দিয়েছে এবং পরে তাকেই ধ্বংস করেছে।”
গয়েশ্বর অভিযোগ করেন, “আজ যারা জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, তারা নিজেরাই নিজেদের ছোট করছেন। এখন দেখা যাচ্ছে তারা সচিবালয়, ডিসি অফিস, এসপি অফিসে গিয়ে নিয়মিত সময় কাটাচ্ছেন—যেটা আন্দোলনকারীদের চরিত্রের সঙ্গে মানায় না।”
আলোচনা সভায় গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন এমন সংবাদ ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করছে এনসিপি ঘরানার কিছু ছাত্র ও রাজনৈতিক কর্মী। আমরা বিশ্বাস করি, অধ্যাপক ইউনূস এমন অপ্রাপ্তবয়স্ক সিদ্ধান্ত নেবেন না।”
তিনি সমালোচনা করে বলেন, “পুরো ক্যাবিনেটে একজনও রাজনৈতিক ব্যক্তি নেই। রাষ্ট্র চালাতে হলে রাজনীতিবিদদের প্রয়োজন। শুধুমাত্র এনজিও কর্মীদের দিয়ে চলবে না। আমরা শুরু থেকেই বলছি—অন্তবর্তী সরকারের কাঠামো পুনর্গঠন করতে হবে।”
নূর অভিযোগ করেন, “ইশরাক হোসেন আদালতের রায়ে মেয়র নির্বাচিত হলেও একজন উপদেষ্টা তাকে শপথ নিতে দিচ্ছেন না। কারণ, দক্ষিণের নিয়ন্ত্রণ চাইছেন তারা।”
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “ভোটের কথা বললেই উনারা (ইউনূসপন্থীরা) যন্ত্রণা পান কেন বুঝি না। এটা তো গণতন্ত্রের কথা নয়। কেউ যদি বলেন পাঁচ বছর তাকে থাকতে হবে, তাহলে সেটা শেখ হাসিনার ছায়া নয় কি?”
তিনি আরও বলেন, “ভালো কাজ করলে মানুষ সমর্থন দিবেই। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে, নানা অপশক্তিকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে, যা দেশের অস্থিতিশীলতা বাড়াতে পারে। এর দায় ইউনূস সাহেবকেই নিতে হবে।”
সভায় আরও বক্তব্য দেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (বিএলডিপি) সভাপতি শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দরে দুবাই পোর্ট ওয়ার্ল্ড এলে কোনো সুফল আসবে না। এটা একটি ষড়যন্ত্র—দেশীয় উদ্যোক্তাদের বাদ দিয়ে বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।”
সিপিবি নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু, জাসদের নাজমুল হক প্রধানসহ আরও অনেকেই সভায় বক্তৃতা দেন।